April 19, 2024, 2:55 pm

দাম কমেনি চিনি-পাম তেলের

দাম বাড়ানো হলে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর আর কমানো হলে আগের দামে কেনা, তাই আরও সময় লাগবে- এই প্রবণতা আবার দেখা গেল বাজারে।

পাম অয়েলের দর লিটারে ১২ টাকা আর চিনিতে কেজিপ্রতি ৬ টাকা কমিয়ে সরকার ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকরের ঘোষণা দিলেও এদিন রাজধানীর বিভিন্ন দোকানে গিয়ে আগের দরেই পণ্য দুটি বিক্রি হতে দেখা যায়।

পাম সুপার তেল আগের দাম ১৪৫ টাকা আর খোলা চিনি ৯০ ও প্যাকেটজাত চিনি ৯৫ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের চিত্র এমন হলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তাদের বেঁধে দেয়া নতুন দরেই বিক্রি হচ্ছে এই দুটি পণ্য। তবে সরকারি সংস্থা টিসিবির দৈনন্দিন বাজারদরের তথ্যেই প্রমাণ হয় এই কর্মকর্তার দাবি অসার।

কারওয়ান বাজারের এক দোকানি বলেন, ‘আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনেছি তাই সে দামেই বিক্রি করব। আমাদের কাছে এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

গত এক বছরে দেখা গেছে, ভোজ্যতেলের দাম যখন সরকার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, তখন বাড়তি সেই দর কার্যকর হয় সঙ্গে সঙ্গে। তবে দুবার দাম কমানোর সিদ্ধান্তে দেখা গেছে দুই সপ্তাহ পরও আগের দরেই বিক্রি হয়েছে পণ্য। দোকানিদের যুক্তি, আগের কেনা।

তেজগাঁওয়ের দোকানি মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘দাম সরকারিভাবে বাড়ানো হয়েছিল। আমরা সে অনুযায়ীই বিক্রি করছি। এখন আবার আজ থেকে কমার সিদ্ধান্ত দেয়া আছে শুনেছি। কমার সিদ্ধান্ত দিলেই কি সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে ফেলতে হবে? সিদ্ধান্ত নিছে কমার তা আস্তে আস্তে কমবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার মধ্যে দুটির দাম নির্ধারণ হয় গত বৃহস্পতিবার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য শাখা দাম নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে; যা রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা জানানো হয়।

নতুন মূল্যতালিকা অনুযায়ী, পাম সুপার তেল প্রতি লিটার খুচরায় সর্বোচ্চ ১৩৩ টাকা; যা এতদিন ১৪৫ টাকায় নির্ধারিত ছিল। মিলগেটে পাম তেল প্রতি লিটার ১২৮ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একইভাবে পরিশোধিত খোলা চিনি প্রতি কেজি ৮৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৮৯ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। মিলগেটে খোলা চিনি প্রতি কেজি ৭৯ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ৮১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে প্যাকেটজাত চিনি মিলগেটে ৮২ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

দাম তো কমল না, আপনারা কী করলেন- এমন প্রশ্নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বকশি বলেন, ‘আমার জানামতে আমাদের নির্ধারিত দামেই পাম তেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে মন্ত্রণালয় দাম কমিয়ে নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা আজ থেকে কার্যকর।

‘বেঁধে দেয়া নতুন দর অনুযায়ী, খুচরায় চিনির দাম কেজিতে ৬ টাকা এবং পাম তেলের দাম লিটারে ১২ টাকার মতো কমেছে। তবে এ দামের বাইরে যদি কোনো ভোক্তা কেনাকাটা করে তাহলে সে আইন অনুযায়ী ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভোক্তা জরিমানার ২৫ শতাংশ ফেরত পাবে।’

এই কর্মকর্তা দাম কমার দাবি করলেও সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজারদরের হিসাবেই তার প্রমাণ মেলেনি। সংস্থাটি রোববার দৈনন্দিন যে বাজারদর উল্লেখ করেছে, তাতে দেখা যায় রোববার ঢাকায় সুপার পাম অয়েলের দর ছিল লিটারে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা।

টিসিবি রোববার ঢাকায় চিনির দর উল্লেখ করেছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :