April 19, 2024, 7:39 am

নিজের হৃদপিন্ড নিজেই পিঠে বয়ে বেড়ায়

অনলাইন ডেস্ক।
ছবি দেখে কেউ বলতে পারবেন ভদ্রমহিলার পিঠের ব্যাগে কী আছে? কেউ পারবেন তো না-ই, এমনকি বললেও হয়ত বিশ্বাস করতে চাইবেন না। উনার ব্যাগে রয়েছে মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ‘Heart’- যা প্রতিমুহুর্তে রক্ত সঞ্চলন করে আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে। সেই অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘাড়ে নিয়ে বয়ে বেড়ান তিনি। এটা কোনো অলৌকিক ঘটনা নয়, একেবারেই বাস্তব ঘটনা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম সফলতা এটি; মানুষকে পুনঃজীবনদানের মতোই ঘটনা।
ভদ্রমহিলার নাম সেলওয়া হোসেন। তিনি এখন পরিপূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন। হাসতে পারেন, কাঁদতে পারেন। তাঁর সকল অনুভুতি ও কাজকর্ম সবই স্বাভাবিক।
বছর দেড়েক আগে সেলওয়া বুকে ব্যথা অনুভব করলে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় হাসপাতালে যান। অবস্থা সংকটাপন্ন বুঝতে পেরে তাঁকে অপেক্ষাকৃত ভালো হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার ডাক্তাররা তাঁর মরণাপন্ন অবস্থা বিবেচনা করে ব্রিটেনের বিখ্যাত ‘হেরেফিল্ড’ হাসপাতালে পাঠান। ওখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর heart সচল রাখা সম্ভব নয় বলে নিশ্চিত হন। তখন ডাক্তারদের বোর্ড বসে তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তাঁর শরীরের heart অপসারণ করে সেখানে বসানো হয় প্লাস্টিকের চেম্বার- যা মানবদেহে হার্টের কাজ করবে এবং প্লাস্টিকের এই চেম্বার সচল রেখে বায়ুর চাপ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন একটি পাম্প। এই পাম্প সচল রাখতে দরকার একটি মোটরের এবং সেই মোটর সচল রাখতে প্রয়োজন দু’টি ব্যাটারির। এই ব্যাটারি, পাম্প ও মেশিন তিনি সার্বক্ষণিক বয়ে বেড়ান তাঁর পিঠের ওই ব্যাগটিতে।
ওই ব্যাগের পাম্প সাদা দু’টি পাইপের মাধ্যমে হাওয়া দিয়ে তাঁর বুকে স্থাপন করে দেওয়া প্লাস্টিকের চেম্বার চালু রাখে- যা তার দেহে হার্টের কাজ করে রক্তপ্রবাহ সচল রাখে। ফলে বেঁচে আছেন সেলওয়া হোসেন।
বিশ্বের ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি- যিনি কৃত্রিম heart নিয়ে বেঁচে আছেন। তাঁর এই চিকিৎসায় সর্বমোট খরচ হয়েছে ৯৬ লাখ টাকা। সামনে আরো গবেষণার মাধ্যমে এই ব্যয় আরো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তখন আরো অনেককে এমন বিকল্প ব্যবস্থায় বেঁচে থাকতে দেখা যাবে।
সেলওয়ার বেঁচে থাকাকে নিঃসন্দেহে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দ্বিতীয় জীবন-দান বলা যায়। তিনি তাঁর পিঠের ওই ব্যাগ ছাড়া বাঁচতে পারবেন না! ডাক্তাররা বলেছেন, ব্যাগের মেশিনে কোনো সমস্যা হলে সেলওয়া সর্বোচ্চ ৯০ সেকেন্ড বেঁচে থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :