দর্শনা কেরু চিনিকলের আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

Padma Sangbad

দৈনিক পদ্মা সংবাদ ডেস্ক ।। চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলে ২০২০-২১ আখ মাড়াই মৌসিমের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৩ টায় মিলের কেইন কেরিয়ার প্রাঙ্গনে দোয়া মাহফিলের মাধ্যে দিয়ে আখ মাড়াইয়ের কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে ।

দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে,প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা- ১ আসনের এমপি সোলাইমান হক জোয়ার্দার (ছেলুন), বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগর, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস,চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মাসুদউজজামান লিটু,কেরু’র শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদুর রহমান সহ প্রমুখ।
এসময়, প্রধান অতিথি সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি বলেন,আজকের এই মাস হলো বিজয়ের মাস। আমরা বিজয়ের মাসে মিল উদ্বোধন করতে এসেছি।
আপনাদের কে বেশি বেশি করে আখ চাষ করতে হবে। কাঁচামাল না হলে মিল দারিয়ে থাকবে। কাঁচামালের প্রয়োজন। কারণ কাঁচামাল না থাকলে এই মিল চলবে না। আখ চাষে চাষীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।সেই সাথে চাষীদেরকে সকল সুযোগ-সুবিধা দিলে মিল কখনো বন্ধ হবে না।
বিশেষ অতিথি, হাজী আলী আজগর টগর এমপি বলেন,আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানিকে ১০৯ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছেন। তার সুফল কিন্তু আপনারা পেয়েছেন। গত বছর কোন মিলের কোন ব্রেক ডাউন হয়নি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাই চিনি শিল্পের উন্নয়ন।
তবে চলতি মাড়াই মৌসুমে কেরু চিনিকল ১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৯ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । চিনিকলের নিজস্ব ১ হাজার ৫৫০ একর জমিতে ২৪ হাজার মেট্রিক টন আখ রয়েছে এবং কৃষকের ৬ হাজার ৯৮২ একর জমির ৯৪ হাজার মেট্রিক টন আখ রয়েছে ।
এছাড়া কুষ্টিয়ার জগতি চিনিকলের আওতাধীন কৃষকদের ৩৬ হাজার মেট্রিকটন আখ কেরুজ চিনিকলে মাড়াই করা হবে ।
ফলে এবারের মাড়াই কার্যদিবস নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ দিন। চিনি আহরণের গড় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬.২৫ শতাংশ ।
গেল অর্থবছর সরকারের কোষাগারে ভ্যাট, ট্যাক্স, শুল্ক বাবদ প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রদান করে।এছাড়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ২০৯ টাকা মুনাফা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ বলেন , চিনিকলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও লােকসানের বােঝা কমাতে প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিক – কর্মচারী , কর্মকর্তাদের আন্তরিক হতে হবে । কোনাে প্রকার অনিয়মের কারণে যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা সৃষ্টি হয় , তাহলে এর দ্বায়ভার সকলকে নিতে হবে । এছাড়া তিনি বলেন , সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে কেরুজ চিনিকল এলাকার চাষিরা কিছুটা আতঙ্কে রয়েছে । তবে কেরুজ চিনিকল বন্ধ হওয়ার কোনাে সম্ভাবনা নেই । কারণ এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান । যে সব চিনি কারখানায় লােকসান হচ্ছিল , সেগুলাের মধ্যে ৬ টি চিনিকলে – আখ মাড়াই কার্যক্রম সরকার বন্ধ রেখেছে । সেক্ষেত্রে আমাদের হতাশ হওয়ার কোনাে কারণ নেই । দেশের এ ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ প্রায় ৭ যুগ ধরে অঞ্চলকে আলােকিত করে রেখেছে , অর্থনৈতিকভাবে করেছে সমৃদ্ধ , সেই প্রতিষ্ঠানটি যাতে বন্ধ না হয় , সে জন্য বেশি বেশি আখচাষ করে প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এলাকার আখচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার আহ্বান জানান।।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Update Time : ০৮:১২:৩৬ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০

দর্শনা কেরু চিনিকলের আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

Update Time : ০৮:১২:৩৬ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০

দৈনিক পদ্মা সংবাদ ডেস্ক ।। চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলে ২০২০-২১ আখ মাড়াই মৌসিমের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৩ টায় মিলের কেইন কেরিয়ার প্রাঙ্গনে দোয়া মাহফিলের মাধ্যে দিয়ে আখ মাড়াইয়ের কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে ।

দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে,প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা- ১ আসনের এমপি সোলাইমান হক জোয়ার্দার (ছেলুন), বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগর, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস,চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মাসুদউজজামান লিটু,কেরু’র শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদুর রহমান সহ প্রমুখ।
এসময়, প্রধান অতিথি সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি বলেন,আজকের এই মাস হলো বিজয়ের মাস। আমরা বিজয়ের মাসে মিল উদ্বোধন করতে এসেছি।
আপনাদের কে বেশি বেশি করে আখ চাষ করতে হবে। কাঁচামাল না হলে মিল দারিয়ে থাকবে। কাঁচামালের প্রয়োজন। কারণ কাঁচামাল না থাকলে এই মিল চলবে না। আখ চাষে চাষীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।সেই সাথে চাষীদেরকে সকল সুযোগ-সুবিধা দিলে মিল কখনো বন্ধ হবে না।
বিশেষ অতিথি, হাজী আলী আজগর টগর এমপি বলেন,আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানিকে ১০৯ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছেন। তার সুফল কিন্তু আপনারা পেয়েছেন। গত বছর কোন মিলের কোন ব্রেক ডাউন হয়নি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাই চিনি শিল্পের উন্নয়ন।
তবে চলতি মাড়াই মৌসুমে কেরু চিনিকল ১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৯ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । চিনিকলের নিজস্ব ১ হাজার ৫৫০ একর জমিতে ২৪ হাজার মেট্রিক টন আখ রয়েছে এবং কৃষকের ৬ হাজার ৯৮২ একর জমির ৯৪ হাজার মেট্রিক টন আখ রয়েছে ।
এছাড়া কুষ্টিয়ার জগতি চিনিকলের আওতাধীন কৃষকদের ৩৬ হাজার মেট্রিকটন আখ কেরুজ চিনিকলে মাড়াই করা হবে ।
ফলে এবারের মাড়াই কার্যদিবস নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ দিন। চিনি আহরণের গড় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬.২৫ শতাংশ ।
গেল অর্থবছর সরকারের কোষাগারে ভ্যাট, ট্যাক্স, শুল্ক বাবদ প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রদান করে।এছাড়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ২০৯ টাকা মুনাফা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ বলেন , চিনিকলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও লােকসানের বােঝা কমাতে প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিক – কর্মচারী , কর্মকর্তাদের আন্তরিক হতে হবে । কোনাে প্রকার অনিয়মের কারণে যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা সৃষ্টি হয় , তাহলে এর দ্বায়ভার সকলকে নিতে হবে । এছাড়া তিনি বলেন , সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে কেরুজ চিনিকল এলাকার চাষিরা কিছুটা আতঙ্কে রয়েছে । তবে কেরুজ চিনিকল বন্ধ হওয়ার কোনাে সম্ভাবনা নেই । কারণ এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান । যে সব চিনি কারখানায় লােকসান হচ্ছিল , সেগুলাের মধ্যে ৬ টি চিনিকলে – আখ মাড়াই কার্যক্রম সরকার বন্ধ রেখেছে । সেক্ষেত্রে আমাদের হতাশ হওয়ার কোনাে কারণ নেই । দেশের এ ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ প্রায় ৭ যুগ ধরে অঞ্চলকে আলােকিত করে রেখেছে , অর্থনৈতিকভাবে করেছে সমৃদ্ধ , সেই প্রতিষ্ঠানটি যাতে বন্ধ না হয় , সে জন্য বেশি বেশি আখচাষ করে প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এলাকার আখচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার আহ্বান জানান।।