চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি।।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভার ভোটে জয়ী হতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার নানা কৌশল প্রয়োগের পরামর্শ
আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। তার এমন বক্তব্যে এলাকায় শুরু হয়েছে নানা সমালোচনার ঝড়। এদিকে, আজ চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন। ভোটাররা প্রতিশ্রুতির ফিরিস্তি নয়, চান বাস্তবায়ন। ভোটের দিন এবং আগের রাতে কি করতে হবে? নেতাকর্মীদের তারই ছবক দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন ভোট করার অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। স্যান্টারে (কেন্দ্রে) যায়ে ভোট হবে না।’ নেতা–কর্মীদের তিনি ভোট করার সেই ‘কায়দা’ও শিখিয়ে দিয়েছেন। নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘টুক করে ভোটের আগের রাত্রি গলির মদ্যি বুলে আসতি হবে, তুই বাড়ির মদ্যিতি নড়বিনে। নড়লি তোর খবর আছে, এবং তুই হচ্চে রাজাকার, তুই হচ্চে জামাত।’এটা বিএনপির লোক, এটা জামায়াতের লোক। আমি ওই লোককে ব্যারিকেড দিয়ে ভোট আটকে দেব। আমরা নৌকাকে ভোট দিয়ে দেব। তাহলে কী হবে জানেন? বিএনপি-জামায়াতের যারা, ভোট দিতে যাতি পাইরল না, আমাদের যে ৫০০ ভোট, ৫০০ ভোটই থেকে গেল। ভোটে অনেক কৌশল আছে। কৌশলগতভাবে আগালে বিপুল ভোটে জয়ী হবো।’
দেলোয়ার এরপর উপস্থিত সবার মতামত জানতে চেয়ে বলেন, ‘আপনারা কি সবাই একমত?’ সমস্বরে সবাই উত্তরে ‘জি’ বলে সাড়া দিলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কারা কারা একমত, একটু হাত উঁচু করে দেখান।’ উপস্থিত লোকজন হাত তুললে তিনি বলেন, ‘থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ।’
এরপর প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীর ভোট ঠেকাতে কৌশল শিখিয়ে দেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে পরিশ্রম করছি কিসির জন্যি? ভোটের জন্যি। এই ভোটগুলো কীভাবে বাড়ির কাছে আটকে দেব? গলির মদ্যি জামাত-বিএনপি। টুক করে ভোটের আগের রাত্রি গলির মদ্যি বুলে আসতি হবে, তুই বাড়ির মদ্যিতি নড়বিনে। নড়লি তোর খবর আছে। এবং তুই হচ্ছে রাজাকার, তুই হচ্চে জামাত। ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। স্যান্টারে যায়ে ভোট হবে না।’
১৪ ফেব্রুয়ারি আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান কাদির গণুর সমর্থনে আয়োজিত আলমডাঙ্গা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে সমাবেশে দেলোয়ার এই বক্তব্য দেন। তার কথায় বিব্রত খোদ দলের সিনিয়র নেতাকর্মী ও মেয়রপ্রার্থী মোঃ হাসান কাদির গনু। আর বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মীর মহিউদ্দিনের শঙ্কা নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে। যদিও খানিক পরেই সব অস্বীকার করেছেন দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেছেন আমি এটা কিছু জানি না আমি এটা বলিনি। কেউ আমার কন্ঠের মতো কন্ঠ নকল করে নেটে ছেড়ে দিয়েছে ।
আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান মেয়র হাসান কাদির (নৌকা), জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাবেক মেয়র মীর মহিউদ্দিন (ধানের শীষ) ও জেলা জাসদের (ইনু) সভাপতি সবেদ আলী (মোবাইল ফোন)।পৌর নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ ঘিরেও উত্তাপের কমতি নেই।
এবার আলমডাঙ্গা পৌরসভায় ভােটার সংখ্যা ২৬ হাজার ৩১২ জন । এর মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৭৫৪ জন এবং মহিলা ভােটার ১৩ হাজার ৫৫৮ জন ।
তবে হামলা আর ভয়ভীতি উপেক্ষা করেই, পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে চান আলমডাঙ্গা পৌরসভার ভোটাররা।
আগামী রোববার হবে ভোটযুদ্ধ।।
Leave a Reply