আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেগমগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ, আটক ২

তাওহীদুল হক চৌধুরী, নোয়াখালী প্রতিনিধি।
নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় আলাইয়াপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। উক্ত ঘটনায় ঐ ছাত্রী প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে।
এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রæয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে নিখোঁজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে একই এলাকার রাসেল (২৫), জোবায়ের (২৪), সাইফুল ইসলাম ইমন (২২) এবং ফয়সাল (২৩) নামের চার যুবকের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরবর্তীতে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগীর মা জানান, একই এলাকার ইমন, রাসেল আমার মেয়েকে ২০১৮ সাল থেকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। এ নিয়ে তাদের নিষেধ করলে উল্টো তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়েকে বলে, ‘আমাদের কথায় রাজি না হলে তোর মাকে মেরে ফেলবো’। এর পরবর্তীতে মেয়ের আতংকে দিন কাটতে থাকে। সে ভয়ে তার মাকে আর কিছু বলেনি। এর কিছুদিন পর রাসেল ও ইমন তাদের বাড়িতে এসে সুকৌশলে কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে তাকে খাওয়ালে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে অস্ত্রের মুখে তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে স্থানীয় এক নিরিহ দোকানিকে ডেকে এনে তাকেও জোর করে বিবস্ত্র করে ঐ মেয়ের দাঁড় করিয়ে ভিডিও ধারণ করে চলে যায়। তার কিছুদিন পর অভিযুক্তরা ঐ ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে রীতিমত ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে লোক-লজ্জা ও অভিযুক্ত বখাটেদের ভয়ে তিনি তার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন। তাতেও তিনি রেহাই পাইনি। বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তারা ধর্ষণ করতো এবং ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে রীতিমত চাঁদাও আদায় করতে থাকে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর রাসেল আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমার মেয়ে কোথায় আছে, কীভাবে আছে তা আমি জানি না। গত সপ্তাহে রাসেল জানিয়েছে এইবার ১ লাখ টাকা দিতে হবে। নয়তো তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে।
তিনি আরো বলেন, ইতোপূর্বে থানায় অভিযোগ করেও কোন সুফল না পেয়ে তিনি দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসীদের ভয়ে ও লোক-লজ্জায় মুখ খুলিনি। বরং প্রতিনিয়ত তাদের অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছি। এবার তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগীতায় থানায় মামলা করতে পেরেছি।
বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার জানান, ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :