অনলাইন ডেস্ক।
সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যায়, শিকারজীবি সমাজ ব্যাবস্থায় নারী পুরুষ সমান ছিলেন এবং সবাই সম্পদ সমানভাবে ভোগসহ আদি থেকেই তারা ঈশ্বরের অনুসন্ধান করতেন । তারা বৃহৎ আশ্চর্যকর কিছু দেখলেই তাকে ঈশ্বর গণ্য করতেন । যেহেতু মেয়েরা স্বতন্ত্র আরেকটি মানুষের জন্ম দিতে পারতেন তাই তাদের দেবী ভাবা হত । সেকারণেই শুরু হয়েছিল মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার । মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েরাই প্রথম করেন কৃষির আবিষ্কার ।
বীজ থেকে চারা হয়, চারা থেকে গাছ ; এটা মেয়েরাই প্রথম আবিষ্কার করেন । তারাই প্রথম চাষ করেছিলেন । পুরুষরা ছিলেন শিকারী ও সংগ্রাহক । কিন্তু তারা সবসময় খাদ্য সংগ্রহে সফল হতেন না । তারা কিছু আনতে পারুক বা না পারুক, মেয়েরা সবসময় পরিবারকে নিশ্চিতভাবে খাদ্য যোগান দিয়ে যেতেন । তাই তাদের খুব আদর ও সম্মান ছিল । কিন্তু যখন থেকে চাষের কাজে পশুকে লাগানো হল (আগে পশুর কাজটাও মেয়েরাই করত) তখন থেকেই পুরুষের আধিপত্যর শুরু । কারণ, পশুশিকার ও পশুপালন তাদের কাজ ছিল । তারা বলতে লাগলেন, ‘এটা আমার জমি । এটা আমার গাছ । এইভাবে ‘আমার’ সম্পত্তির সৃষ্টি হল । আমার সম্পত্তি, আমার নারী, আমার সন্তান ইত্যাদি ইত্যাদি । এই কৃষি ভিত্তিক সমাজের কারণেই উদ্বৃত্ত জমা এসেছে আর উদ্বৃত্ত জমাটার কারণেই এসেছে শ্রেণী । ফলে একদিকে যেমন সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি হল, পাশাপাশি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থারও পরিবর্তন ঘটিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার প্রবর্তন হল । এই পট পরিবর্তনের পিছনে বড় অবদান রাখেন ধর্মীয় গুরুরা । যদিও মেয়েরা এখনও চাষের কাজে আপাদমস্তক ডুবে থাকেন । কিন্তু চাষের কৃতিত্ব সব পুরুষের হয়ে যায় । লোকে বলেন ‘চাষী ভাই’ ; ‘চাষী বোন’ নয় ।
(সৌজন্যে)
হেনরিক হার্ডার
& David De Cartwright
Leave a Reply