অনলাইন ডেস্ক।
মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত বুধবার থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে। এদিকে, চলমান সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
শনিবার গণমাধ্যমকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, চলমান লকডাউন বাড়ানোর পরামর্শ আছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী সোমবারের (১৯ এপ্রিল) সভার পর ওই দিন বা পরদিন মঙ্গলবার কী হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
জানা যায়, লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এ বিষয়ে আগামী সোমবার সভা ডাকা হয়েছে। সেখানেই লকডাউনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
শনিবার জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির একজন সদস্য বলেন, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে না। তাই আরও এক সপ্তাহ সর্বাত্মক লকডাউন রাখার পরামর্শ দিয়ে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। এ বিষয়ে সরকার এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আগামী ১৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত সভায় সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ওই সদস্য বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক থাকায় চলমান লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এ বিষয়ে আগামী সোমবার সভা ডাকা হয়েছে। সেখানেই লকডাউনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। আর প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। এরপর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। যেটি ছিল কার্যত ‘লকডাউন’। কয়েক দফায় বর্ধিত হয়ে টানা ৬৬ দিন ছিল এ অবস্থা।
গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে করোনা পরিস্থিতি।
কিন্তু এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত বছরে এত মৃত্যুর সংখ্যা দেখেনি দেশ। তবে এ বছরই আক্রান্ত ও মৃত্যু রেকর্ড হারে বাড়তে থাকে।
করোনা সংক্রমণের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য গণপরিবহন চলাচল বন্ধসহ বিধিনিষেধ আরোপ করে ১৮ দফা নির্দেশনা দেয় সরকার। এরমধ্যে গণপরিবহন অর্ধেক আসনে যাত্রী বহনের শর্ত দিয়ে চালুর অনুমতিও দেওয়া হয়। খোলা হয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল। এরপর আরও অবনতির দিকে যেতে থাকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি।
এর প্রেক্ষিতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। তবে এর মাঝে ১২ ও ১৩ এপ্রিল আগের লকডাউন বর্ধিত করা হয়। কিন্তু সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন ৯৬ জনের রেকর্ড মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
Leave a Reply