আজ ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চীনা টিকার অনুমোদন দিলো বাংলাদেশ, দেশেই উৎপাদিত হবে করোনার টিকা

অনলাইন ডেস্ক।।
বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেছেন, তারা চীনের টিকা সিনোফার্মের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন এবং এ টিকা দেশেই উৎপাদনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। “তারা ইতোমধ্যেই ৫ লাখ ডোজ অনুদান হিসেবে দিয়েছে। হয়তো ১/২ সপ্তাহের মধ্যে এটি আমরা পাবো। এরপর ক্রয় বিধি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় অনুযায়ী কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে,” বৃহস্পতিবার টিকা সম্পর্কিত এক ব্রিফিং তিনি একথা বলেন। -বিবিসি বাংলা
মাহবুবুর রহমান বলেন বাংলাদেশে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা আছে এবং এগুলো হলো ইনসেপ্টা, হেলথ কেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস। “শুরুতে ইনসেপ্টার সাথে যোগাযোগ হবে। চীনা ও রাশানরা এসে দেখবেন। তারা এসেস করবেন। এরপর তাদের মধ্যে সমঝোতা হবে টিকা উৎপাদনের জন্য। ইনসেপ্টার একাই প্রতি মাসে ৮ মিলিয়ন টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে”। চীনা টিকা আসার পর এক হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে তার সেফটিসহ আনুষঙ্গিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন দেশের তের কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। এজন্য অক্সফোর্ডে টিকা ছাড়াও স্পুটনিক ভি, চীনা টিকার পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকেও আসবে এবং ফাইজার থেকেও পাওয়া যাবে কিছু টিকা। এর আগে সকালে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক চীনা টিকার অনুমোদনের তথ্য জানিয়ে বলেন বাংলাদেশের কোন কোম্পানি চাইলে রাশিয়া ও চীনের টিকা উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক ভি-র জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ নিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তিনটি টিকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যবহার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু ভারতের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা বাংলাদেশে না পাওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে দেশটি। আর মে মাসে স্পুটনিক ফাইভের ৪০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশাবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জানান, রাশিয়া থেকে ‘স্পুটনিক ভি’ টিকা আমদানি করা হবে সরকারি পর্যায়ে। ”সরকারের একটি করা আছে, সেই কমিটির মাধ্যমে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ করে, নেগোশিয়েশন করে, কত অ্যামাউন্ট আসবে, কি দাম হবে, সেটা নির্ধারণ করে এই ভ্যাকসিনটা আমাদের দেশে আমদানি করা হবে,” তিনি মঙ্গলবার বলেছেন।
চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ (সিএনবিজি) বা সিনোফার্ম এই টিকাটি তৈরি করেছে। এটি চীনের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। গত ৩০শে ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে যে, তাদের তিন দফা পরীক্ষায় টিকাটি ৭৯ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে। তবে টিকাটি ব্যবহার করা সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, তারা ৮৬ শতাংশ সাফল্য দেখতে পেয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষ কর্মসূচীর আওতায় চীনের ১০ লাখ মানুষকে এই টিকা দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই এটি অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। তৃতীয় দফার ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই এ বছরের জানুয়ারিতে টিকাটি গণহারে ব্যবহারের অনুমোদন দেয় চীন।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকে একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় সিনোফার্মের টিকা স্থগিত করেছি পেরু, তবে পরবর্তীতে তা তুলে নেয়া হয়।
এই টিকাটি দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। অন্যান্য টিকার মতো এটিরও দুইটি ডোজ নিতে হবে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :