আরও পড়ুন >>>দর্শনা মুজিব নগর সড়ক হতে ৮৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক ১।
রাশিদা-য়ে আশরার,কবি ও সাহিত্য সম্পাদক দৈনিক পদ্মা সংবাদ।
মহান সৃষ্টিকর্তা এমন এক স্বকীয় সত্তা- যিনি অবিনশ্বর শক্তির আঁধার! পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে প্রাণীকুল ফেরেশতা এমনকি মৃত্যুর ফেরেশতা “মালাকুল মাউত”সমস্ত প্রাণী কূল জিন,ফেরেশতাদের জান কবজ করার পর শুধু তিনি জীবিত থাকবেন, তখন সৃষ্টিকর্তা বলবেন আর কেউ বেঁচে আছে? মৃত্যুর ফেরেশতা বলবেন শুধু আপনি আর আমি বেঁচে আছি, তখন আল্লাহ বলবেন এবার তুই মর…আজরাইল ভয়ে থর থর করে কাঁপতে থাকবেন আর বলবেন আমি সমস্ত আত্মাদের জান কবজ করলাম আমাকেও মরতে হবে? অতঃপর তিনিও মৃত্যুবরণ করবেন। থাকবেন একমাত্র স্বকীয় সত্তা মহান আল্লাহ তায়ালা।অর্থাৎ আজরাইল সর্বশেষ প্রাণ ত্যাগ করবেন। শুধু একমাত্র সক্রিয় সত্তা মহান সৃষ্টিকর্তা থাকবেন। তাঁর ইচ্ছায় আবার কবর বাসি গণ জীবিত হবে, আত্মা দেহের মধ্যে প্রতিস্থাপন হবে তারপর কবর থেকে একে একে উঠবে সবাই, এমন মনে হবে হয়তো কেবল মাত্র ঘুম থেকে উঠলো অতঃপর সেই রুহানি জগত। শেষ বিচার, চুলচেরা বিশ্লেষণ হিসাব- নিকাশ হাশরের ময়দান আর সেদিন সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং থাকবেন বিচারক তাঁর আদালতেই সংঘটিত হবে- জান্নাত/ জাহান্নাম অনন্তকালের জীবন… যে ভাল কাজ করবে সে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে আর যে মন্দ কাজ নিয়ে যাবে সে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।
“আল্লাহ কখনও জন্ম নেননি, জন্ম দেননি, তাঁর সমতুল্য কেউ নেই,যিনি আদি ও অন্ত তাঁর শেষ নেই।”তিনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের স্রষ্ঠা এবং আমাদের পালনকর্তা! তিনি তাঁর পরিচয় পবিত্র কোরআন শরীফে সূরা ইখলাস এর মাধ্যমে স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরেছেন। জানতে- বুঝতে, উপলব্ধি করতে হলে সূরা ইখলাসের অর্থ মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে প্রতিটি মুমিন মুসলমানের জন্য। পবিত্র কুরআন সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ যা নাযিল হয়েছে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর। তিনি রাহমানির রাহিম মেহেরবান! মানব জাতির জন্য সম্পূর্ণ জীবন বিধান কোরআন ও হাদিস থেকে বাতলে দিয়েছেন তিনি নিজেই আলহামদুলিল্লাহ!
পালনকর্তা দান করেছেন মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা এছাড়া পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টি মানুষের কল্যাণে নিহিত। এতকিছুর পরেও আমরা সেই মহান আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করতে ভুলে যায়, ভুলে যাই আমাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ, সুস্থতা- অসুস্থতা ও কষ্টের সময়ের কথা। কারণ মানুষ জাতি বড়ই স্বার্থপর ও নাদান, আমরা শুধু বর্তমানকে মূল্য দিয়ে তার পিছনে ছুটে বেড়াই।
আধুনিকতার অতিশয্যে নিজেকে বিক্রি করতে ও দ্বিধা করে না মানুষ। আর যারা এই লোভ লালসা সুখ ভোগ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তারা যথাযথ ভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে। মানুষ একথা কেন ভুলে যায়, সৃষ্টিকর্তা এতকিছু দান করেছেন- বান্দাদের প্রতি তাঁর কিছু হক রয়েছে তাঁর প্রিয় সেই বান্দাদের উপর- যা বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন মানুষ হিসাবে আমাদের পালন করা অবশ্য কর্তব্য। আর আল্লাহর এবাদত প্রার্থনা ও ফরজ সুন্নত বিধান বা নিয়ম পালন না করলে আমাদেরকে পাপী হতে হবে কারণ তিনি আমাদেরকে বিবেক বুদ্ধি ইচ্ছা, আবেগ অনুভূতি, সুখ কষ্ট, রোগ-শোক সবকিছু দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন, যাতে করে আমরা সৃষ্টিকর্তাকে জানতে চিনতে ও বুঝতে পারি, উপলব্ধি করতে পারি, ভক্তি ও ভালবাসতে পারি- মূলত পৃথিবীর জীবন একটি পরীক্ষা কেন্দ্র সে পরীক্ষায় আমাদেরকে উত্তীর্ণ বা পাস করতে হবে। কিন্তু একথা চরম অনিবার্য সত্য তিনি তাঁর বান্দাদেরকে অনেক অনেক গুণ বেশি ভালোবাসেন। মানুষ হেঁটে গেলে তিনি দৌড়ে যান,
যদি কেউ এক পা বাড়ায় তিনি অধিক কদম তার দিকে অগ্রসর হন ক্ষমা ও দয়ায়।
মৌলিক অনেক বিষয় বা বিধান মানুষের অজানা থাকে অথবা বেখবর তাই কিছুটা সময় হলেও বিশদ জ্ঞান আরোহন করা হবে একটু ধৈর্য ধরে কোরআন শরীফ অর্থসহ ও হাদিসের বইগুলি, ইসলামিক আলোচনা অনুষ্ঠান গুলো শুনলে। যা এই জীবনের সঙ্গে সঙ্গে অনন্ত- কালের জীবনের জন্য পাথেয় স্বরূপ।যদিও ধর্ম তত্ত্ব ও মৌলিক বিষয় ভিত্তিক কোন কিছু দেখলে ও শুনলে এখন অনেকটা অনীহা এবং গায়ে জ্বর আসার সদৃশ! তবুও সাম্প্রতিক ও চলমান সময় প্রথমে আহমেদ দিদাত- ডক্টর জাকির নায়েক,আর এই সময়ে মিজানুর রহমান আজহারী অনেকটাই মৌলিক ও জীবন মুখী করতে আগ্রহী করেছেন যুবসমাজ ও সব বয়সের মানুষকে বিশ্বজুড়ে। উপরে উল্লেখিত ছাড়াও এই ধরনের অনেক গুণী বক্তা বিভিন্ন দেশে যুগে যুগে স্বয়ং আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাঃ) সম্পর্কে- মানুষের জীবন বিধান সম্পর্কে, জ্ঞান দান করেছেন, কোরআন হাদিসের আলোকে ইসলামকে আলোকিত এবং সমৃদ্ধ করেছেন।
‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ অন্ধকার যুগে মানুষ ছিল কুয়াশাছন্ন। যুগে যুগে সভ্যতার বিবর্তনের ধারায় আজ উন্নতির চরম শিখরে মানুষ পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে ইন্টারনেটের বদৌলতে। ভাবতে অবাক লাগে পুরা বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়…আরো ভাবতে অবাক লাগে সেই সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চরম পর্যায়ে নৈতিক অধঃপতন ও অবক্ষয়; হিংসা- বিদ্বেষে ভরা মন লোভ-লালসা আক্রান্ত আর সীমাহীন দুর্নীতি! এই সমাজ ও বিশ্ব ব্যাধিগ্রস্ত তবে করোনা ও সমগ্র বিশ্বজুড়ে একযোগে অবাক বিস্ময় সাম্প্রতিক চলমান সময়ে; সৃষ্টিকর্তার ছেড়ে দেন ছাড় দেননা, এই অন্যায়- অনিয়ম, দুর্নীতি সম্পর্কে সৃষ্টিকর্তা সম্যক অবগত যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন ও পালনকর্তা। মনে রাখা প্রয়োজন নিজের কৃতকর্ম ও কর্মফলের জন্য নিজেকেই জবাবদিহি করতে হবে একদিন- খুব কঠিন অবস্থা হবে সেদিন।
শেষ বিচারের দিন শুধু যারা আল্লাহর প্রকৃত বান্দা তারা তাঁর আরশ এর নিচে ছায়া পাবে, আর পাপীরা প্রখর রোদে নিক্ষিপ্ত হবে, সূর্য মাথার এক হাত উপরে থাকবে; মগজ গুলো ভাতের মাড়ের মতো গলে গলে পড়বে- জিহ্বা টা কুকুরের মতো ঝুলতে থাকবে!
আর তখন প্রত্যেকের আমলনামা দেখানো হবে, সবাই অস্বীকার করবে এটা আমার আমলনামার খাতা বা ডায়েরি নয়- তখন নিজের অঙ্গ-প্রতঙ্গ নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে, হাত পা কথা বলবে, সম্পূর্ণ ভিডিও চিত্র দেখানো হবে, সূর্য এক হাত মাথার উপরে থাকবে; মগজ গলে গলে পড়বে ছটফট করে বলতে থাকবে আর বলবে হে আল্লাহ! আমাকে আর একবার পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিন আমি ঠিকমত বিধি-বিধান পালন করব, সৃষ্টিকর্তা বলবেন কোনদিন না তারপর জবান বন্ধ করে দেওয়া হবে। মানুষের স্বভাব সম্পর্কে তিনি কি অবগত নন যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন? বরং তিনি মনের ভিতর আমাদের যা কিছু চলছে তা সম্পর্কেও জানতে- বুঝতে পারেন! মৃত্যুর পর সুন্দর দেহটি পচে গলে, ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর যিনি হার গুলোকে জোড়া দিতে সক্ষম, আমাদের শরীরের মধ্যে রুহ প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম- একবার উপলব্ধি করুন! সৃষ্টিকর্তা সমগ্র মানব জাতিকে জানার বোঝার তৌফিক ও হেদায়েত দান করুন আমীন।
Leave a Reply