দৈনিক পদ্মা সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে ডাক্তার সাহেবরা যে বক্তব্য দিয়েছেন এগুলো বিএনপি’র শেখানো।
আজ সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টিভি কেবল নেটওয়ার্ক অপারেটর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে ডাক্তারদের বক্তব্য প্রসংগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বক্তব্যে এটি স্পষ্ট যে, ডাক্তার হিসেবে তারা যতটুকু না বক্তব্য দিয়েছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি’র শিখিয়ে দেয়া বক্তব্যই দিয়েছেন। আর বিবৃতিদাতাদের বেশিরভাগই বিএনপি দলীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত।’
বিএনপি এখন বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতিটা তাদের নেতাদের কাছ থেকে ডাক্তারদের মধ্যেও নিয়ে গেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমি টেলিভিশনে দেখেছি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ড্যাবের দপ্তর সম্পাদক ডা. মো. ফখরুজ্জামান স্বাক্ষরিত আরেকটি বিবৃতি ছিলো। আরেকজন ডাক্তার কালকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এরা সবাই বিএনপি’র দলীয় ও ঘরোয়া রাজনীতির সাথে যুক্ত।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডাক্তার সাহেব বলেছেন, শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা আছে। আর চিকিৎসা আছে জার্মানী আর যুক্তরাষ্ট্রে, ভারতে তো নাইই, সিঙ্গাপুরে, ব্যাংককেও নাই। বাস্তবতা হলো, এখন ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক মানুষ সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে চিকিৎসা করতে আসে। ডাক্তার সাহেব কিভাবে বললেন অন্য কোথাও নাই, শুধুমাত্র তারেক রহমান যেখানে আছে সেই যুক্তরাজ্যেই চিকিৎসা আছে আর আছে পাশের দেশ জার্মানী আর ইউএসএ-তে।’
সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘দেশে বিশৃঙ্খলা না চাইলে বেগম জিয়াকে বিদেশে যেতে হবে’ এবিষয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব যদি একথা বলে থাকেন, তাহলে উনারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছেন। আমি মনে করি, এজন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে। কারণ তিনি যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করছেন সেটি নিজেই স্বীকার করেছেন এবং এটি ফৌজদারি অপরাধ। তারা অতীতে অনেক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, দেশের মানুষ তাদেরকে আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেবে না।’
ক্যাবল অপারেটরদের সাথে বৈঠক শেষে এবিষয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন শহরসহ অন্যান্য শহরগুলোতেও তারা ডিজিটাল হেড স্থাপন করেছেন। এর পাশাপশি প্রত্যেক গ্রাহকের কাছে সেট টপ বক্স থাকলে ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজ হবে। এতে গ্রাহক ভালোভাবে টেলিভিশন দেখতে পারবে এবং একইসাথে সরকার প্রতিবছর ১৫ থেকে ১৮শ’ কোটি টাকা যে রাজস্ব হারাচ্ছে, সেটিও আদায় হবে আবার এখন ক্যাবল অপারেটরা ফিড অপারেটরের কাছ থেকে পাওনা সঠিকভাবে পায় না, সেটিরও অবসান হবে।
মন্ত্রী জানান, মন্ত্রণালয় ৩০ নভেম্বর যে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলো, সেটির ওপর আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কাজ চলছে, আশা করছি স্থগিতাদেশ উঠে গেলে পুনরায় সময় নির্ধারিত হবে। তবে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল হওয়া প্রয়োজন, এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে এবং আমরা এতে বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত গ্রাহক সবাই যাতে প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী এককালীন বা কিস্তিতে সেট টপ বক্স কিনতে পারে এবং একইসাথে দেশে এটি উৎপাদন করা যায় কি না সেটিও আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করেন ড. হাছান।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব খাদিজা বেগম, কোয়াব প্রশাসক, আকাশ ডিটিএইচ, ন্যাশন ওয়াইড মিডিয়া, জাদু ভিশন, ওয়ান এলায়েন্স, কোয়াব ঐক্য পরিষদ ও সমন্বয় পরিষদ এবং মুক্তধারা ফাউন্ডেশন প্রতিনিধিবৃন্দ বৈঠকে অংশ নেন।
এদিন বিকেলে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে তাদের কার্যালয়ে ডিজিটাল ল্যাব উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
Leave a Reply