ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দেওয়া সামাজিক সুরক্ষা খাতের টাকা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। নতুন ভাতাভোগীদের অনেকেই টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ব্যক্তির ভাতাভোগীর তালিকায় নাম উঠলেও টাকা চলে যাচ্ছে ভুয়া একাউন্টে। অনেকে সদর উপজেলা অফিসে এসে মোবাইল নাম্বার ঠিক করে গেলেও টাকা গেছে অন্য মোবাইলে। এ নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। প্রশ্ন উঠেছে কার মোবাইলে টাকা যাচ্ছে ? কে এই নাম্বার দিচ্ছেন ? ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী হাসিনা বেগমের বয়স্ক ভাতার প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা তার মোবাইলে আসেনি। তার ছেলে ইসরাফিল হোসেন অভিযোগ করেন, অফিসে গিয়ে দুইবার সঠিক মোবাইল নাম্বার দিয়ে আসলেও ৬ হাজার টাকা অন্য মোবাইলে চলে গেছে। টাকা না পেয়ে পরিবারটি হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সাধুহাটী ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মর্জিনা খাতুন জানান, তার বিধবা ভাতার টাকা নগদ একাউন্টের ০১৭২৫৩১৮৫৭৮ নাম্বারে চলে গেছে বলে অফিস থেকে জানানো হয়েছে। অথচ এই নাম্বার তিনি দেননি। নাম্বারটি এখন বন্ধ রয়েছে। বংকিরা গ্রামের অসুস্থ জোহরা খাতুনের টাকা নগদ একাউন্টের ০১৭১৯২৬৭২৭২ নাম্বারে প্রদান করা হয়েছে। এই নাম্বারটিও বন্ধ রয়েছে। একই গ্রামের ভরস মন্ডলের স্ত্রী সুন্দরী বেগমের টাকা নগদ এর ০১৭৩৪৫৯৮২৪৫ নাম্বারের মোবাইলে চলে গেছে। সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের বানিয়াকান্দর গ্রামের আতোর আলী জোয়ারদারের ছেলে দলিল উদ্দীন জোয়ারদারের টাকা নগদ একাউন্টের ০১৭৫১৩৬২০০৪ নাম্বারে প্রদান করা হয়েছে। নাম্বারটি সচল নয় বলে তিনি জানান। এ ভাবে জেলার ৬ উপজেলার শত শত ভাতাভোগীর টাকা নিজ নিজ মোবাইলে না এসে অন্য মোবাইলে চলে যাচ্ছে। কারা এই ভুল নাম্বার সমাজসেবা অফিসে দিয়েছেন তা দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলতে পারছেন না। অনেকে বলছেন নগদ ও সমাজসেবা অফিসের কেও না কেও এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছে। সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, ভাতাভোগীদের প্রতারণা ও হয়রানী রোধে আমরা অফিস কম্পাউন্ডে নগদ সেন্টার দিয়েছি। সেখান থেকে ভাতাভোগীরা নিজ নিজ একাউন্ট যাচাই করে নিতে পারবেন। তিনি বলেন, বেশির ভাগ ভাতাভোগী তাদের নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার ভুলে যাচ্ছে বা হারিয়ে ফেলছে। এতে আরো জটিলতা বাড়ছে। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ জানান, নগদ একাউন্ট খোলার সময় তড়িঘড়ি করে ভুল নাম্বার দেওয়া হতে পারে। এটা গ্রাহক বা এজেন্টের ভুলেও হতে পারে। তিনি বলেন এ নিয়ে আমরা নগদ এর সঙ্গে কথা বলেছি। অন্য মোবাইলে চলে যাওয়া অনেকের টাকা অনুনয় বিনয় করে ফেরৎ আনা হচ্ছে। আশা করা যায় আস্তে আস্তে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে।
Leave a Reply