আজ ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধন জোরদার করার অঙ্গীকার নিয়ে ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন

বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বন্ধন আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বাংলাদেশ ও জাপান আজ যৌথভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর উদযাপন করেছে।
আজ বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের মাইলফলক উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাস এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী লীগের সভাপতি তারো আসো প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পৃথক শুভেচ্ছা ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ।
এ উপলক্ষে দুই প্রধানমন্ত্রীই দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জাপান ও এর জনগণের মূল্যবান সমর্থন ও অবদানের জন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক সফরের কথা তুলে ধরেন, যা দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় ও স্থায়ী বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়এর ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন যা অদূর ভবিষ্যতে “ব্যাপক অংশীদারিত্ব” থেকে “কৌশলগত অংশীদারিত্ব” হিসেবে বিকশিত হবে।
তিনি জাপানের অব্যাহত অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সহায়তা লাভের কথা উল্লেখ করে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, বিগত পঞ্চাশ বছরে জাপানের দেয়া ঈর্ষণীয় সহযোগিতা পারস্পরিক কল্যাণের লক্ষ্যে আগামী পঞ্চাশ বছরের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচু্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও স্থায়ীভাবে প্রত্যাবাসন দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করার জন্য জাপানের সমর্থন চেয়েছেন। ঢাকা এবং টোকিও এই সংকট সমাধান করার লক্ষ্যে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষ্যে পাঠানো বার্তায় বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্যে জাপানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন ।
তিনি ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সফরের উল্লেখ করেন যা দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্ত ভিত্তি স্থাপন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে জাপানের প্রধানমন্ত্রী দুটি দেশের জনগণের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন।
এ কে আব্দুল মোমেন এসময় প্রধান হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি জাপান সরকার ও জনগণের দেয়া নৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন ও সহায়তার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি জাপানের “বাংলাদেশের বন্ধুদের” প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান যাদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভে তাদের অমূল্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সম্মানে ভূষিত করেছে।
তিনি ১৯৭৩ সালের অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জাপান সফরের কথাও তুলে ধরেন যা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হওয়ার জন্য জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃঢ় বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রয়াসে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিল্পকলা একাডেমির সৌজন্যে বর্ণিল নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
এতে বিডা, বেপজা, বেজার চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশে জাপানি ব্যবসায়ী মহলের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :