অনলাইন ডেস্ক।।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কার সঙ্গে জোট হবে তা নির্বাচনের সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচন এখন প্রহসন হয়ে গেছে। নির্বাচনের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের তিনটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। এসময় তিনি পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, এখন কিছু সংখ্যক মানুষ দ্রুতবেগে ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে। আর দেশের বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন আরো গরিব হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই এখন আর নৌকায় ভোট দেয় না। আবার বিএনপির রাজনীতি অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মর্যাদাসম্পন্ন নেতাকর্মীরাই এখন দলে দলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছে। অনেকেই যোগাযোগ রাখছে, তারাও জাতীয় পার্টিতে যোগ দেবে। দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা জাতীয় পার্টিকে আবারো রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরো বলেন, সরকারি দলের নেতারা বলে বেড়ান নারায়ণগঞ্জে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট কেমন হয়েছে- তা বলতে চান না। বিয়য়টি এমন হয়েছে, সরকার চাইলে ভোট সুষ্ঠু হবে আর না চাইলে হবে না- এটা হতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বিশ্বাস করে না। ১৯৯১ সালের পর থেকে দল দুটি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে সুবিধামতো সংবিধান কাটাকাটি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। এখন কেউ গণতন্ত্রের কথা বললে মানুষ প্রতারণা মনে করে। ১৯৯১ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর বিএনপি এসে দেশের আরো ক্ষতি করেছে। বিএনপির পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে রাজনৈতিক অবস্থা আরো খারাপ করেছে। এভাবেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় অনেকটাই গণতন্ত্র ছিল। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে যা চলছে তাকে কোনোভাবেই গণতন্ত্র বলা যায় না। এখন কর্তৃত্ববাদী শাসনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ।
তিনি আরো বলেন, দুটি দলের সর্বোচ্চ অপপ্রচারও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেশের মানুষের অন্তর থেকে মুছে ফেলতে পারেনি। পল্লীবন্ধু এখনো গণমানুষের হৃদয়ে চিরঞ্জীব হয়ে আছেন। যারা ঈর্ষা করে পল্লীবন্ধুকে গালাগাল দিচ্ছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা কখনোই সফল হবে না।
সভায় আরো বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু , পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব জসিম উদ্দীন ভূঁইয়া, ফখরুল আহসান শাহজাদা, সমাজকল্যাণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান, নুরুল হক নুরু, আক্তার দেওয়ান, এমএ সুবহান, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ মাশুক রহমান, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য মনিরুজ্জামান টিটু, ঝুটন দত্ত, রেজাউল ইসলাম, সাহিন আরা সুলতানা রিমা, দক্ষিণের নেতা জাকির হোসেন, কফিল উদ্দিন, মো. আব্দুল কাজী, মো. তারা মিয়া, মো. সোহেল রানা, মো. শাহজাহান।
Leave a Reply