আজ ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসেও হয়নি প্রীতি ও মিলনের প্রেমের জয়

প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা এক ভারতীয় তরুণীকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। ৮ মাস বাংলাদেশের সেফহোমে থাকার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর দিয়ে প্রীতি পন্ডিত নামের ওই তরুণীকে ভারতীয় থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশের পুলিশ।

এ সময় ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বিএসএফ’র গেঁদে কোম্পানি কমান্ডার অশোক মেহি, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ গোপাল চন্দ্র দে, কাস্টমস ইন্সপেক্টর অজয় নারায়ণ, কৃষ্ণগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর বাপিন মুখার্জি, ডিআইও সাধন মণ্ডল, মানবাধিকার কর্মী চিত্তরঞ্জন দে।

আর বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন- বিজিবির আইসিপি কমান্ডার সুবেদার শহিদুল ইসলাম, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আব্দুল আলীম, দর্শনা থানার এসআই হারুন অর রশীদ, রংপুর সিআইডি ইন্সপেক্টর এনায়েতুর রহমান ও এসআই রাব্বি।

জানা যায়, প্রেমের টানে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল প্রীতি পন্ডিত। বাংলাদেশে এসে প্রেমিক মিলনের বাড়ি রংপুরে চলে যায় প্রীতি।

এদিকে, প্রীতির পরিবার তাকে খোঁজে না পেয়ে কৃষ্ণনগর থানায় জিডি করে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অবশেষে বাংলাদেশে সন্ধান মেলে প্রীতির।

এরপর শুরু হয় প্রেমের পরাজয়। রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ প্রীতিকে উদ্ধার করে। ঠাঁই হয় রংপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রে। সেখানেই ৮ মাস ছিল প্রীতি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রীতি পন্ডিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ও কৃষ্ণনগর মিলনীনি গার্লস হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা মন্টু পন্ডিত ও মা ইতি পন্ডিত থাকতেন কৃষ্ণনগর শহরের ভাতজংলা এলাকায়। মেয়ে যেদিন প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যায় সে সময় মা ইতি পন্ডিত বাড়িতে ছিলেন না।

ইতি পন্ডিত বলেন “সকালে কাজে গেছিলেন। দুপুরে বাড়ি ফিরে দেখি মেয়ে বাড়িতে নেই। তখন স্কুল, প্রাইভেট স্যার-সহ সব জায়গায় খোঁজ করি। তারপর একটি ছোট ছেলে জানায়, প্রীতি টোটোতে (ইজিবাইক) চড়ে একটি ছেলের সঙ্গে যেতে দেখেছে সে।

এ ছাড়া সেখানে কাজ করে আল-আমিন নামে বাংলাদেশি একজন জানায়, প্রীতি মিলনের (ইতির প্রেমিক) সঙ্গে পালিয়ে গেছে।

ইতি আরও জানান, ২০২১ সালের ২১ জুন সকালে নিখোঁজ হয় তার মেয়ে। মিলন ও আল- আমিন অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কৃষ্ণনগর শহরে কাজ করতেন। থাকতেন তাদের এলাকায়।

রংপুরের সিআইডি ইনসপেক্টর এনায়েতুর রহমান জানান, এরপর ২৬ জুন সকালে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ উদ্ধার করে প্রীতিকে। সেই থেকে তাকে রাখা হয় রংপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রে। প্রেমিক মিলনের হাত ধরে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিল প্রীতি।

এদিকে, প্রীতিকে উদ্ধারের পর তার প্রেমিক মিলন (২২) ও তার সহযোগী হাবিবুরের (২৩) বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করে পুলিশ। পরে তাদের আটক করা হয়। এরপর তারা জামিনে মুক্ত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :