“আশরাফুল মাখলুকাত” মানুষ সৃষ্টির সেরা!
মানুষ ফেরেশতা নয় তবুও ফেরেশতাদের চেয়ে উত্তম এবং উপরে স্থান; সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মানুষ তখনই উপরে থাকতে পারে যখন সে উত্তম কাজ করে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে পারে। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে তাঁর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আল কুরআন প্রেরণ করেছেন বিভিন্ন জাতির জন্য। সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর নাযিল হয়েছে পবিত্র আল কুরআন। অতএব এই পবিত্র গ্রন্থটি সমগ্র মানব জাতির জন্য নিদর্শন স্বরূপ ও মুসলিম উম্মাহর পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
পৃথিবীতে ভালো-মন্দ কাজের ফল স্বরপ- পরবর্তী জীবনের ভালো থাকা মন্দ থাকা অর্থাৎ জান্নাত ও জাহান্নাম বিবেচিত হয়। আর তার সঙ্গে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার দয়া ও ক্ষমা এই- অন্তর্নিহিত ভাব বা তাৎপর্য অন্তরে ধারণ করা প্রয়োজন। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য শিকার করা-এবং ইসলামের বিধিবিধান যথাযথভাবে পালন করা প্রত্যেকটি মুমিন মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভ। ঈমান, নামাজ, রোজা, যাকাত ও হজ্জ।
আল্লাহ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন- এর মাধ্যমে মানুষের পরিপূর্ণ জীবন বিধান বাতলে দিয়েছেন! কাজেই পবিত্র আল কুরআন সহি ও শুদ্ধ ভাষায় বাংলা মানে সহ প্রতিদিন রুটিন মাফিক কিছুটা সময় পাঠ করা জরুরী। এই পবিত্র গ্রন্থটি মানব মুক্তির অন্যতম পথ। শেষ বিচারের দিন পবিত্র এই আল কোরআন মানুষের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে, বলবে হে আল্লাহ! আপনার অমুক বান্দা যথাযথ ভাবে পবিত্র কোরআন পাঠ করত, অতএব তাকে দোযখের আগুনের প্রবেশ করানো যাবে না। সেদিন আল কোরআনের জবান খুলে দেওয়া হবে এবং কথা বলবে, সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে স্বয়ং ঝগড়া করবে- যা বিস্ময়কর! আলহামদুলিল্লাহ। আর না পাঠ করলেও সাক্ষ্য দেবে এখানে তা সহজেই বোধগম্য।
রমজান মাস আসন্ন। এই মাসটি মানবমুক্তির জন্য তাৎপর্যময় একটি মাস। আসুন নিজের নফস বা ইচ্ছার উপর শুধুমাত্র না চালিত মানুষ হিসাবে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবোধ কে জাগ্রত করে তুলি। ভালো ও সৎ কাজের মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা সালাত আদায় করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ কিন্তু রমজান মাসে ফরজ নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ অধিক পরিমাণে পড়লে অত্যাধিক নেকী লাভ হয়। শেষ বিচারের দিন যাদের অনেক অনেক ফরজ নামাজ বাদ হয়ে গেছে তখন নফল নামাজ গুলো ফরজ হিসাবে বিবেচ্য হবে। তাই আসুন অন্য কেউ উদ্বুদ্ধ করি তাতে নিজেরও সওয়াব ও পুণ্য হাসিল
হবে। শুধু একা একা নামাজ না আদায় করে কায়েম অর্থাৎ অন্যদেরকেও দাওয়াত দেই-নামাজ বা সালাত আদায় করার আহ্বান জানাই।
রোজার ফজিলত সম্পর্কে কমবেশি মুসলমানগণ অবগত। রোজার পুরস্কার আল্লাহ তায়ালা নিজে এবং সঙ্গে সঙ্গেই দিয়ে থাকেন। আর অন্য সব এবাদত আমল শেষ বিচার এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভালো-মন্দের কৃতকর্মের ফলাফল হিসাব নিকাশ শেষে দিয়ে থাকেন। তাই রমজান মাস বরকতের ও ফজিলত পূর্ণ মাস।
এ মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদত যেমন তাহাজ্জুদ নামাজ সহ অন্যান্য আমল বেশি বেশি দরুদ তাজবিহ পাঠ, জিকির করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথা নেকি ও ছওয়াবের কাজ।
এছাড়া বিভিন্ন নবী- রাসূল দের জীবনী পড়তে ও জানতে চেষ্টা করি। একটি হলেও সৎ কাজের পরামর্শ ও সহীহ হাদিস প্রচার করতে সমর্থক হই। সকলের সঙ্গে উত্তম আচরণ, সাম্য ও সোহার্দ্য বজায় রাখি। কারণ জীবন যত প্রিয় আপন- মৃত্যু অকাম্য হলেও অধিক সন্নিকটে। সৃষ্টিকর্তার কর্তার নিকট ইচ্ছাকৃত- অনিচ্ছাকৃত ভুল বা যে কোন অপরাধের জন্য সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা ও দোয়া প্রার্থনা করি। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীর হক আদায় করি। কোন ব্যক্তির সঙ্গে নিজের অপরাধ হয়ে গেলে দেরি না করে ক্ষমা চাইতে দ্বিধা বোধ না করি।দেরি হলে সেই শোধরানোর সময়টুকু হয়তো আর পাওয়া যাবে না।
আসুন জীবনের অবধারিত সত্যগুলো অনুধাবন করে আমরা এই পবিত্র রমজানে একমাস সিয়াম সাধনার মধ্যে অধিক পরিমাণ নেকি ও দোয়া- ক্ষমা প্রার্থনা করতে সমর্থ হই! সৃষ্টিকর্তা সকলকে হেদায়েত দান করুন আমীন। অবধারিত কথাটি মনে রাখা প্রয়োজন… জীবন যত প্রিয় ও কাছের- মৃত্যু তার চেয়েও নিকটবর্তী ও কাছের; অপ্রিয় হলেও সত্য বাণী- চিরন্তনী!
২০২২
Leave a Reply