গ্রীষ্মের আগমন… চৈত্রের তাপদাহ; ধুলাবালি রুক্ষ-
শুষ্ক আবহাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ প্রায়! ইতিমধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে বৈশাখী ঝড়ের কিঞ্চিৎ পূর্বাভাস- মৌসুমী হাওয়া; খানিকটা বৃষ্টি এনেছে জনমনে প্রশান্তের ছায়া! গাছে গাছে নতুন পাতা-বীজগুলো চারা গাছে পরিণত হয়েছে। কচি পাতা গুলো মৃদু বাতাসে হেলে দুলে নিজের ভাষায় কথা বলতে শুরু করেছে; কল্পনায় জেগে ওঠছে গ্রামীণ জীবন- সোনালী শৈশব!
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতুতে সমভাবাপন্ন।ঋতু বৈচিত্রের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশ রং বদলায় ফিরে আসে স্বমহিমায়! গ্রামীণ জীবন অনেকটাই সহজ সরল শান্ত প্রকৃতির। আঁকা বাঁকা মেঠো পথ, নির্জনতা, ভেজা মাটির গন্ধ-রাস্তার দু’ধারে ঝোপ ঝাড়, সাপ ক্ষোপ দৈব ভয়- কিছুটা শঙ্কিত, সারি সারি বৃক্ষ- তৃণ লতা, চারিদিকে সবুজের হাতছানি, নদীর জলে ডিঙ্গি নৌকার কলকল ধ্বনি, স্নিগ্ধ অপরূপ; রূপকথার গল্পের মতো মায়াময় সোনার বাংলার রুপখানি!
অপরদিকে শহুরে জীবন তার উল্টোটা, বৈচিত্র হীন একঘেয়েমি- যান্ত্রিকতায় ঘেরা!জীবন ও জীবিকার তাগিদে এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে কৃত্রিম সংকটে ধুঁকছে কি নেশার স্বপনে-হন্যে হয়ে ছুটে চলা মানুষ।পাঁচটি মৌলিক চাহিদা যেমন অন্নবস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা এগুলোর অভাব সবার না থাকলেও চাহিদা বেশি- যোগান বা সরবরাহ কম। যার কারণে সবই আছে তবুও কিছুই যেন নেই; মোটকথা অভাব একভাবে মিটলে ও মন্দ স্বভাব সহজে যেতে চায় না।
প্রাচুর্যের লোভ,অভাবে- স্বভাবে নানা ধরনের জন সরগরম। চলে নানা রকম কুকীর্তি ও দুর্নীতি। উন্নয়নের ধারায় দেশ এগিয়ে গেলেও মানুষ যেন সভ্যতার আলো থেকে পিছিয়ে, মনুষ্যত্ব-বিবেক হারিয়ে অন্য এক জগতে! তথ্যপ্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার,সংস্কৃতির বদলে অপসংস্কৃতি ও আধুনিকতার জোয়ারে গা ভাসিয়ে অত্যাধুনিক, অতিরিক্ত যা সবটুকুই খারাপ!যেমন অতিরিক্ত অপচয়কারীকে সৃষ্টিকর্তা পছন্দ করেন না, জীবনে যখনই সুযোগ বেশি আসে তখনই মানুষ খেই হারিয়ে ফেলে অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই। ক্ষণস্থায়ী জীবন টুকুর শুধু সুখ ভোগের নয়, সবকিছু মিলেই মধ্যপন্থা সবসময় উত্তম!
প্রকৃত অর্থে মানুষের অভাববোধ হচ্ছে প্রাণের- অর্থাৎ প্রাণ প্রাচুর্যের! শ্বাসযন্ত্র কে একটু হলেও সবুজের ছোঁয়ায় তৃপ্তি আনে ছাদ কৃষি,আঙিনা বা উঠান কৃষি।হতে পারে বারান্দার রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ফুল- ফল ও সবজির গাছ। হতে পারে ছাদ কৃষি ও আঙিনা কৃষি, বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে নগরবাসী মানুষের জীবনে। পরিবারের প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা যেমন শাক-সবজি ফলমূল বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের বাড়তি একটি উপায় হচ্ছে চিত্তবিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে। বারান্দা বা বেলকুনিতে গাছ থেকে পরিবারের খাদ্য চাহিদা তেমন না মিটলে ও মনের চাহিদা অনায়াসে আনয়ন করে।এই আনন্দ টুকু নেহায়েত কম নয়!
বেকার সমস্যা বাংলাদেশের এখনো অন্যতম সমস্যা!চাকরির বাজার এখনো গরম। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শেষ করে বেকার অবস্থায় দিনাতিপাত করছে দুর্বিষহ ভাবে। শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই তুলনায় এখনো বৃদ্ধি পায়নি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যার কারণেও কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। অনেকেই উদ্যোক্তা ও কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে দীর্ঘদিন বেকার অবস্থায় না থেকে।বেকারের অভিশাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করে উদ্যোক্তা হিসাবে জীবন শুরু করা অনেক বেশি ফলপ্রসূ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে।।
Leave a Reply