দৈনিক পদ্মা সংবাদ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত‘মানবাধিকার চর্চার বিষয়ে ২০২১ কান্ট্রি রিপোর্ট’-এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের স্বীকৃতি দিয়েছে।
২০২১ ক্যালেন্ডার বছরের জন্য ১৯৮টি দেশ ও ভূখ- সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর দুর্নীতি, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা তদন্ত ও বিচারের জন্য কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট শ্রমিকদের অধিকার, পুলিশ ও নিরাপত্তা ইস্যু, নারী ইস্যু এবং অন্যান্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে ‘তথ্য-ভিত্তিক’ নথি তৈরি করেছে।
এদিকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন, মানবাধিকার চর্চা বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনে কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাই পাওয়া যায়নি, বরং বাংলাদেশে যে ইতিবাচক প্রবণতা চলমান তাও দেখা গেছে।
দূতাবাসের একজন মুখপাত্র আমেরিকান সেন্টারে ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকার সেই (মানবাধিকার) লঙ্ঘন সংশোধন বা মানবাধিকার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মসূচি চালু করার (ব্যবস্থা) নিয়েছে।’
তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র এ বছর তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী পালন করছে, সেহেতু ‘গণতন্ত্র, সুশাসন এবং মানবাধিকার জোরদার করার প্রয়াস অগ্রাধিকার পাবে।
কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে রিপোর্টই করেনি। বরং আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে এগিয়ে আসি যাতে তা আরও ভালো হয়।
মার্কিন দূতাবাসের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে, মানবাধিকার রক্ষা করতে এবং বিশ্বজুড়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের জনগণের মানবাধিকারের বিষয়ে বিনিয়োগ করি। একই সাথে আমরা সারা বিশ্বে আমাদের অংশীদারদের সহায়তা করি। তিনি আরো উল্লেখ করেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে আলোচনা চলছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, উল্লিখিত সময়ে বাংলাদেশে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে বেআইনি বা নির্বিচারে হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-; জোরপূর্বক গুম; স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মিডিয়ার ওপর অমানবিক ও গুরুতর বিধি-নিষেধের ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, এলজিবিটিকিউদের হুমকি প্রদান বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতারও গুরুতর সমস্যা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
মার্কিন দূতাবাস পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং পরবর্তী মানবাধিকার চুক্তিসমূহের নিরিখে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার ও কর্মীদের অধিকার প্রতিপালন ও শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমাদেরকে অবশ্যই মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানোনোর ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে হবে… মানবাধিকারের বিষয়ে অগ্রগতি বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়ে শুরু হয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, কান্ট্রি রিপোর্ট আইনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না, বরং দেশগুলোর রেটিং দেয় না বা তারা মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে কিনা তা ঘোষণা করে না।
দূতাবাস বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি পররাষ্ট্র নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা আমাদের কূটনৈতিক নেতৃত্বের সাথে সাথে আমাদেরকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একতাবদ্ধ করে এবং যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষা।
Leave a Reply