বিবেক রায়, কলকাতা।।
২০২১ এর আগস্ট মাসে অল ইন্ডিয়া স্কিল ডেভলপমেন্ট নামে একটি সংস্থা গজিয়ে উঠেছে । যার রেজিস্টার অফিস OT Road, PS Kharagpur,Town,Dist-Mednipur, West Bengal 721305 জানা গেছে এটি আশাদীপ পাবলিক সার্ভিস সেন্টার । ঐ সংস্থাটির কর্ণধার গোপাল বেরা।
যেখানে উৎকর্ষ বাংলা ও প্রধান মন্ত্রী স্বরোজগার সহ একাধিক ট্রেনিং সেন্টার ট্রেনিং পার্টনার বিভিন্ন NGO কে পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে ।
বাড়ির গয়না জমি জায়গা ভিটে মাটি বন্ধক, বিক্রি করে তাঁরা বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন এখন বাড়ি ভাড়া মেটাতে পথে বসেছে বহু বেকার যুবক। সেই সমস্থ যুবকেরা খড়গ পুরের অফিসে বার বার দ্বারস্থ হয়েছে কিন্তু দিনের পর দিন মাসের পর মাস গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছেন দেখা পর্যন্ত করেননি গোপাল বেরা। ফোন করলে ফোন তোলেননি তিনি – অন্য নম্বর থেকে ফোন এক দুবার ধরলেও হুমকির শুরে বলেছেন যা পারো করে নাও টাকা ফেরত পাবে না। ঐ কনসালটেন্সি ফার্মটি কলকাতায় অফিস ছিল। প্রতারণার জাল যখন চারিদিকে ছড়িয়ে যায় তখন গোপাল বেরা অফিস তুলে নিয়ে গিয়ে খড়গপুরে জাল ছড়াতে শুরু করে। কিন্তু সে কাজে খুব একটা সফল হতে না পারায় -ঐ অফিসে ২০২১ সালের আগস্টে অল ইন্ডিয়া স্কিল ডেভলপমেন্ট নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন গোপাল বেরা। সংস্থার চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উনি নিজেই। সভাপতি তপন কুমার জানা, সম্পাদক সৌমিক সাঁতরা সহ ১০ জনের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন হয়।
এই সংস্থার নামে সারা ভারত বর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা NGO গুলিকে মেম্বার করিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হচ্ছে এমনই অভিযোগ।
এপর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলা গুলিকে নিয়ে ২৬ সে মার্চ একটি ন্যাশনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় দিঘা বর্ডারের তালসারিতে।
সেখানে প্রায় একশ NGO র কর্মকর্তারা যোগদান করেন দুরদুরান্ত থেকে আসা মানুষেরা সেভাবে পরিষেবা পাননি। অথচ ৭০০ টাকা করে প্রতিনিধি ফি জমা নেওয়া হয়েছিল। সমস্ত সম্মেলনটি ছিল অগোছালো।
অনুষ্ঠানটি জাতীয় সম্মেলন নাম দেওয়া হলেও শুধুমাত্র পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য কমিটি ঘোষিত হয়।
জাতীয় স্তরের সভাপতি ঘোষণা হলেও কোনো কমিটির নাম প্রকাশ হয়নি।
সম্মেলন শেষ করে আসার পর গোপাল বেরা মহাশয়ের কনসালটেন্সির অফিসে একটি সভা ডাকা হয় যেখানে ট্রাস্টি বডির সাথে সদ্য নির্বাচিত জাতীয় স্তরের প্রেসিডেন্ট সংগ্রাম মিত্রকে ডাকা হয় বলে জানা যায়।
সম্মেলনে আলোচ্য ছিল বিগত সম্মেলনের মূল্যায়ন ,ট্রাস্ট ডিডের সংযোজন বিয়োজন , ট্রাস্টি বডির অকেজো সদস্যদের বোর্ড মেম্বার থেকে সাধারণ সদস্যে রূপান্তর ও আগামী কর্মসূচি ।
ঐদিনের ট্রাস্টি মেম্বারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাত্র পাঁচ জন।
ঐ সভায় নবনির্বাচিত সভাপতিকে ট্রাস্টি বডিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন ট্রাস্টি বডির সভাপতি তপন কুমার জানা l
উপস্থিত সকলে ঐ প্রস্তাবের উপর সমর্থন জানান।
মাননীয় সংগ্রাম মিত্র নিম্ন লিখিত শর্ত স্বপেক্ষে সম্মতি দেন।
শর্তগুলি নিম্নরূপ
এক: অতি সত্তর কলকাতায় একটি কেন্দ্রীয় অফিস করতে হবে ।
দুই : জাতীয় স্তরের কমিটির নামের তালিকা লিখিত অনুমোদন সহ প্রকাশ করতে হবে।
তিন: রাজ্য ও জাতীয় স্তরের কমিটির স্বাধীন ওয়াটসাপ গ্রুপ করতে হবে।
চার : জাতীয় স্তরের মেম্বার ও রাজ্য স্তরের মেম্বারদের নিয়ে একদিনের সভা করতে হবে।
পাঁচ: যে সমস্ত জেলা বা রাজ্য কমিটি গুলি হয়নি তা দ্রুত শেষ করতে হবে।
ছয়: যাঁরা ট্রাস্টি বডির ইনাক্টিভ সদস্য তাঁদের সাধারণ সদস্যে এবং নতুন উদ্যোগী সংগঠককে ট্রাস্টি বডিতে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
সাত: রাজ্য এবং কেন্দ্র কে স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার দিতে হবে । আট: সরাসরি গ্রুপে নোটিশ গুলি চেয়ারম্যান না করে সম্পাদক বা সভাপতিকে করতে হবে।
প্রস্তাবগুলিকে সকলে সমর্থন জানান।
সভা হয়ে যাওয়ার এক মাস পরের সিদ্ধান্তগুলির একটিও কার্যকরী না হওয়ায় মি۔ মিত্র সভাপতির কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
ইতিমধ্যে এগুলি প্রশ্ন তোলায় অগণতান্ত্রিক ভাবে NGO কে অবগত না করে এসোসিয়েশন থেকে বহিস্কার করার অন্দরে তীব্র ক্ষোভ তৈরী হয়েছে ।
এখন NGO গুলিকে যে যে কথা বলে সদস্য করা হয়েছিল তার থেকে সম্পূর্ণ আশি ডিগ্রি ঘুরে যাচ্ছে এসোসিয়েশনের ট্রাস্টি বডির অনেকে। উল্ল্যেখ থাকে যে গত ডিসেম্বরে উত্তর বঙ্গের সম্মেলন করতে গিয়ে ২৫ সে ডিসেম্বর মালদার ইংলিশ বাজারে সংস্থার জেলা সম্মেলন চলাকালীন সম্মেলনটি বানচাল হয়ে যায়। একদল বিক্ষুব্ধ যুবক ক্যামেরা অন করে গোপাল বেরাকে মঞ্চে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করেন- আশাদীপ কনসালটেন্সি ফার্ম কার ? ঐ ফার্ম থেকে ট্রেনিং সেন্টার পাইয়ে দেওয়ার না করে কত জনের কাছে কত কোটি টাকা তুলেছেন ? কতজন সেন্টার পেয়েছে ? কতজন প্রতারিত হয়েছে ? AISDA কি আরও একটি প্রতারণার চক্র ? ইত্যাদি।
বিগত কয়েকদিন ধরে এরকমই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে AISDA
কয়েকটি NGO নোটিশ পাঠিয়েছে এসোসিয়েশনকে। উত্তর না পেলে তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হবে এমনটাই জানান NGO গুলির সম্পাদক এখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই শুধু ওরিন্টেশনের লোভে পড়ে গোপাল বেরার কন্সাল্টেন্সির চক্রে জড়িয়ে পড়ছেন। খবরে প্রকাশ 80G 12A বাবদ চল্লিশ হাজার টাকার বেশি বিল করছেন। প্রজেক্ট পাওয়ার লোভে। এই সংগঠনের আড়ালে একটি পরিকল্পিত ব্যবসা লুকিয়ে আছে তা দ্রুত স্পষ্ট হচ্ছে।
এই বিষয়গুলি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা প্রতিটি জেলা শাসকে দপ্তরে চিঠি করছেন। এমনটাই জানান ঐ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক দিব্যাংশু ভট্টাচার্য্য । জেলায় NGO গুলি যাতে প্রতারণার চক্রে না পড়েন তা নিয়ে সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠন।
Leave a Reply