অনলাইন ডেস্ক।।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে সপ্তম শ্রেণির ফারজিনা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীর (১৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে পাটগ্রাম থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ককোয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে। রবিবার (১৫ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা দূর্বৃত্তরা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণশেষে হত্যা করে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার বিকেলে লালমনিরহাট মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে নিহত ওই শিক্ষার্থী বাড়ির পাশে ভুট্টাক্ষেতের আইলে গরু ঘাস খাওয়াতে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন রাত পর্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ও আশপাশে গ্রামের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খুঁজেও তাকে পায়নি। পরে আজ রবিবার সকালের দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ গজ দূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে তার লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। পরে বিকেলের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
নিহত শিক্ষার্থীর মা খোতেজা বেগম (৪৫) বলেন, ‘আমি ৪০ দিনের মাটি কাটার কর্মসূচির কাজে ইউনিয়ন পরিষদে যাই। সন্ধ্যায় বাড়ি আসলে আমার ছোট মেয়ে জানায়, বিকেল থেকে বড় বোন ফারজিনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়, বাড়িতে খুঁজেছি। আত্মীয়-স্বজন সবার বাড়িতে খুঁজেও পাইনি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ভোরে আমি বাড়ির পার্শ্ববর্তী ভুট্টাক্ষেতে খুঁজতে যাই। ক্ষেতে আমার মেয়ের লাশ পাই।’
বাবা আব্দুর রহমান (৫০) বলেন, ‘আমার মেয়ের মৃগী রোগ ছিল। এ রোগে মারা গেল নাকি কিভাবে মারা গেল, বলতে পারছি না।’
গ্রামবাসীদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, মেয়েটির বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে তার লাশ পাওয়া গেল। মৃতদেহের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। পেটের ওপর দুই হাত দু’দিক হতে ও এক পায়ের ওপর অন্য পা দেওয়া মৃত অবস্থায় ভুট্টাক্ষেতে পড়ে ছিল। মৃগী রোগে মৃত্যু হলে এভাবে তো থাকার কথা নয়। তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করতে পারে।
ঘটনাস্থলে জোংড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান মজিবর রহমান, নাজির গোমানী বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার শরিফ হোসেন, পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক, লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) তাপস সরকার লাশ উদ্ধারের জায়গা ভুট্টাক্ষেত ও মৃত শিক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে পরিবার এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘ভুট্টাক্ষেতে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর লাশ পড়ে আছে জানার পরই লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব হবে।’
Leave a Reply