”দর্শনায় ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’’ ট্রেনের স্টপেজের দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ এলাকাবাসী!
দৈনিক পদ্মা সংবাদ ডেস্ক।।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর রবিবার (২৯ মে) থেকে ফের ঢাকা থেকে কলকাতার সাথে ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়েছে।
এদিন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ১৬৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস। এর উদ্বোধন করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।
ট্রেনটিতে আসন রয়েছে ৪৫৬টি। আর ১৭০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি (ভারত) যাত্রী ১৬ জন। আর একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক।
রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, এখন থেকে ট্রেনটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করবে। দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, প্রথম দিনে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রী সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। তবে ট্রেনে করে ভারতে যেতে পারায় আনন্দিত যাত্রীরা।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনের ম্যানেজার লিটন চন্দ্র দে বলেন, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করেছে। বিকেল ৪টায় কলকাতা স্টেশনে পৌঁছাবে এটি। আগামীকাল সোমবার (৩০ মে) আবার কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে বিকেল ৪টায় ঢাকা আসবে ট্রেনটি।
বাংলাদেশ-ভারত ট্রেন চলাচল ফের শুরু হচ্ছে ১ জুন থেকে।
তিনি বলেন, পূজা, ঈদের ছুটি ও শীতকালে ট্রেনের সব আসনে যাত্রী থাকে। আর অন্যান্য সময় গড়ে ৩০০ আসনে যায় যাত্রী। এখন করোনা পরবর্তী সময়ে ট্রেনটি চালু হয়েছে। তাই যাত্রী কিছুটা কম। এটা ক্রমান্বয়ে বাড়বে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোঃ নাসির আহম্মেদ দৈনিক পদ্মা সংবাদ কে বলেন, দর্শনায় ‘মৈত্রী এক্সপ্রেসের স্টপেজের দেওয়ার জন্য দাবি জানান স্থানীয় লোকজন । তাই এই বিষয়ে স্থানীয় মেয়র মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে তুলে ধরবো। এখন এই বিষয়টি দুই দেশের সরকারের বিষয় । হয়তো বা দর্শনায় মৈত্রী এক্সপ্রেসের স্টপেজে সরকার দিলেও দিতে পারে।
অন্যদিকে দীর্ঘ ২৬ মাস পর কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করেছে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেন। স্থানীয় সময় আজ সকাল ৭টা ১০ মিনিটে কলকাতার পুরোনো চিৎপুরের আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন থেকে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বন্ধন এক্সপ্রেসের খুলনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ট্রেনটি আবার আজ বেলা ৩টায় খুলনা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করবে। সন্ধ্যা নাগাদ ট্রেনটি কলকাতা স্টেশনে পৌঁছাবে।
এদিকে ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’এরপর সীমান্তবর্তী দেশের সর্বশেষ স্টেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় পৌঁছায় দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট যাত্রা বিরতির পর দুপুর ২টায় সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতার উদ্দেশে ছুটবে মৈত্রী। এরপর বিকেল ৪টায় কলকাতার চিতপুর স্টেশনে থামবে।
এদিকে শুধুমাত্র কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে মৈত্রী ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। টিকিট কাটার সময় ভিসাসহ পাসপোর্টের মূল কপি দেখাতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে মৈত্রীতে ভ্রমণের সময় আরটিপিসিআরের ৭২ ঘন্টার করোনা নেগেটিভ সনদ অথবা দুই ডোজ করোনার টিকার সনদ লাগবে।
২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাত্রা শুরু করেছিল যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। সে সময় দুই দেশের সীমান্তবর্তী দর্শনা ও গেদে রেলস্টেশনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস করা হতো। এর পর যাত্রীদের যাত্রাসময় কমানোর জন্য দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সীমান্তবর্তী স্টেশন দর্শনা ও গেদের পরিবর্তে স্ট্যাটিং পয়েন্ট অর্থাৎ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট ও কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে করা শুরু হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ডিজি জানান, এখন থেকে ট্রেনটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করবে। ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। এই রুটের যাত্রী প্রতি ট্রেন ভাড়া ট্রাভেল ট্যাক্স-সহ (৫০০ টাকা) এসি আসনের ভাড়া পড়বে ৩ হাজার ৫০৫ টাকা ও এসি চেয়ার কারের ভাড়া ২ হাজার ৫০৫ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে বৃহস্পতিবার ও রবিবার – ২ দিন ছাড়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস। আর ভারত থেকে ফেরে দু’দিন। এদিকে রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর জানায়, মিতালী এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত এসি বার্থের ভাড়া ৪,৯০৫ টাকা। এসি সিটের ভাড়া ৩,৮০৫ টাকা। আর এসি চেয়ারের ভাড়া ২,৭০৫ টাকা।।
Leave a Reply