অনলাইন ডেস্ক।।
খুলনার ডোবা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপ্তিকর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষকদের প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে প্রধান শিক্ষক বলেছেন, স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠনের দ্বন্দ্বর জের ধরে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। তাবে মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপ্তিশ্বর বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতেন। সর্বশেষ দুই ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন তিনি।
বিষয়টি প্রকাশ পেলে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ ও মানববন্ধন করে। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ঢুকে বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিল ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রধান শিক্ষককে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মারধর করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে প্রধান শিক্ষককে থানা পুলিশ আটক করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও জড়ো হন।
স্কুলের শিক্ষার্থী নন্দিনী শীল, সুজয় বৈরাগী, রূপম মহন্ত অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান। তিনি পড়ানোর নামে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতেন। বিষয়টি কেউ জানালেও প্রতিবাদ করেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলটির কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবক জানান, স্কুলটি স্থানীয় কূট রাজনীতির শিকার হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের কিছু ত্রুটি-বিচ্যূতি রয়েছে। আর সেটিকে ওই রাজনীতিতে কাজে লাগানো হয়েছে। এত বড় একটি অভিযোগ কিন্তু স্কুলের চেয়ারম্যানকে প্রথমে কেউ জানায়নি বরং উল্টো সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উসকে দেওয়া হয়েছে। যা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে বের হয়ে আসবে। এমন কী শিক্ষককে মারধরও করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক দীপ্তিস্বর বিশ্বাস ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে সমস্যাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নাজেহাল করছে।
রূপসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় মানুষের কাছে খবর পেয়ে আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেছি। পরে তাঁকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও টিএনও কাছে দেওয়া হয়েছে। কেউ অভিযোগ বা আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দীন বাদশা সাংবাদিকদের কে বলেন, ‘ঘটনা শুনে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের বক্তব্য শুনব। কেউ অপরাধ করলে ছাড় পাবে না। ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগের এই নেতারা আরো বলেন, ‘ঘটনার সাথে স্থানীয় দ্বন্দ্ব, মতপার্থক্য থাকতে পারে। তারপরও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’
Leave a Reply