আজ ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বরগুনার তালতলী উপজেলা ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, সেই কোচিং সেন্টার সিলগালা

অনলাইন ডেস্ক।
বরগুনার তালতলী উপজেলা কোচিং সেন্টারে এক ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় ওই কোচিং সেন্টার সিলগালা করা হয়েছে। এদিকে নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৬টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে এস এম সাদিক তানভীর সেই কোচিং সেন্টারে যান। কিন্তু সেখানে অভিযুক্ত মাস্টার ছগির হোসেনকে না পেয়ে কোচিং সেন্টারটি সিলগালা করে দেন।

নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রের নাম আসাদ। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। এর প্রায় দেড় মাস আগে উপজেলার লাউপাড়া বাজারে সাকসেস কোচিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। আহত স্কুলছাত্র উপজেলার লাউপাড়া সাগর সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম সাদিক তানভীর বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিও আমিও দেখেছি। খুবই দুঃখজনক। বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়ে সত্যতা পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে এসে মাস্টার ছগির হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আপাতত কোচিং সেন্টারে সিলগালা করা হয়েছে।

নির্যাতনকারী ছগির মাস্টারকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুঁজছে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, উপজেলার লাউপাড়া বাজারে সাকসেস নামে একটি কোচিং সেন্টার খোলেন স্থানীয় ছগির হোসেন। যার কোনো অনুমতি নেই। সেখানে ওই এলাকার লাউপাড়া সাগর সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণির প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট পড়ানো হয়।

কোচিং সেন্টারে আর কোনো শিক্ষক না থাকায় ছগির হোসেন একাই শিক্ষকতা করেন।

মাঝে মধ্যে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে তার নিচের শ্রেণির প্রাইভেট পড়ানো হয়। এই কোচিং সেন্টারে প্রায় দেড় মাস আগে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আসাদকে মারধর করা হয়। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিও ভাইরালের পরপরই একের পর এক ছাত্র-ছাত্রীরা নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলছেন।
আহত স্কুলছাত্র আসাদ বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে আমার ক্লাসের এক বন্ধুর সাথে দুষ্টুমি করি। পরে প্রাইভেট শিক্ষক ছগির স্যারের ভয়ে আমি তিন দিন যাবৎ কোচিং সেন্টারে যায়নি। তার পরে প্রাইভেটের বড় ভাইদের দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে একটি রুমে আটকানো হয়। এরপর ছগির স্যার ১০টি বেত নিয়ে আসেন। প্রায় আধাঘণ্টা যাবৎ আমাকে পেটাতে থাকে। আমি স্যারের হাতে পায়ে ধরলেও আমাকে বেধরক মারধর করে। এই আধাঘণ্টায় সাতটি বেত ভেঙে ফেলেছেন।

বেধড়ক মারধর করায় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে ছেড়ে দেয় ও একটি রুমে আটকে রাখে। জ্ঞান ফিরলে আমাকে আবারও মারধরের ভয় দেখানো হয়, যাতে এই বিষয়টি কাউকে না বলি। পরে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে আমাকে ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। আমি স্যারের ভয়ে এতদিন মুখ খুলিনি, তারপর দেখি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি দেখে আমি নিজেও অবাক হয়ে গেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :