আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা আগামীকাল

আগামীকাল রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা যথাযথ গাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করবে। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো সন্ধ্যায় আকাশে রঙিন ফানুস উড়ানো। এই উৎসব এবং মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান (ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের বস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠান) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ আজ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এক বাণীতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, গৌতম বুদ্ধ সারা জীবন একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়তে শান্তি, মৈত্রী, মমতা, শান্তি ও মানবতার শাশ্বত বাণী প্রচার করেছেন। তিনি বলেন, ‘বুদ্ধের অহিংস বাণী এবং জীবন প্রেম এখনও বিশ্বজড়ে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। তার আত্মত্যাগের আদর্শ মানবতায় পরিপূর্ণ।’ আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বৌদ্ধ ধর্মের নির্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ‘চীবর’কে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কঠিন চীবর দান’কে বলা হয় শ্রেষ্ঠ দান। তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে এই ‘কঠিন চীবর দান’ উৎসব সবার মধ্যে ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতি গড়ে তোলে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির গতি ত্বরান্বিত করতে সকল সম্প্রদায়ের জনগণকে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়–য়া বাসসকে জানান, এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই কোটি টাকার বিশেষ অনুদান দিয়েছেন। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দেশের প্রতিটি তালিকাভুক্ত মঠে ৫০০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছে।
সব মঠ, ধর্মীয় সংগঠনের নিজ নিজ কার্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে পূর্ণিমা। ভোরবেলা সমস্ত মঠে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন এবং পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পবিত্র শ্লোক উচ্চারণের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হবে।
ভিক্ষুদের উপবাস ভঙ্গ, গণপ্রার্থনা, রক্তদান, সংঘদান, আলোচনা, পঞ্চশীলা, আস্থাশীলা ও প্রদীপ পূজার কর্মসূচি তুলে ধরা হবে। রাজধানীর কমলাপুরের ধর্মরাাজিক বৌদ্ধ বিহার, মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার, কালাচাঁদপুর বৌদ্ধ বিহার, উত্তর বৌদ্ধ বিহার, মিরপুরের আদিবাসী বৌদ্ধ মন্দির এবং আশুলিয়া বোধিজ্ঞান মৈত্রী ভাবনা কেন্দ্রে প্রধান ধর্মীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রামের নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির, কাতালগঞ্জ নবপ-িত বিহার, আগ্রাবাদ শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার, দেবপাহাড় পূর্ণাচর আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার এবং মোমিন রোডে সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন মন্দিরে ধর্মীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, দেশের সকল মঠে শান্তি ও সমৃদ্ধি তথা বৈশ্বিক শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।
উৎসব নির্বিঘেœ উদযাপনের জন্য শহর ও জেলার সব মন্দির ও আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :