স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ।
তিনি বলেন, ‘জনগণের টাকায় এই সরকারি হাসপাতালগুলো নির্মাণ করা হয়েছে, তাহলে জনগণের চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি থাকে কীভাবে? কেবল ভালো ব্যাবহার ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে দেশ থেকে হাজারো মানুষ ভারত, সিংগাপুর বা থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে। এতে আমাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।’
আজ সোমবার বিকেলে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাকক্ষে চট্রগ্রামের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের সাথে যুক্ত বিভিন্ন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্সদের সাথে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় জাহিদ মালেক এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। অথচ দেশেই একটু ভালো চিকিৎসা, ভালো ব্যাবহার ও মেশিনগুলোর সঠিক প্রয়োগ করতে পারলে, দেশেই এই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রাখা যেত। একারণেই, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গোটা দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে মাঠে নেমেছি। আমরা দেখতে চাই, স্বাস্থ্যসেবার সরকারি সেবাখাতে মূল সমস্যা ঠিক কোথায় কোথায়?’
তিনি বলেন, সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে অনেক টেস্টিং মেশিন কেনা হয়েছে, কিন্তু মেশিনগুলো হয় নষ্ট হয়েছে, না হয় মেশিন চালানোর লোক নেই। অনেকেই আবার ঠিকমতো অফিস করেন না। হাসপাতালে রোগীদের সাথে ভালো ব্যাবহার করা হয়না। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন নেই। সময়ের কাজ সময় মতো হচ্ছে না। এগুলো তো মেনে নেয়া যাবে না।
জাহিদ মালেক বলেন, মানুষের টাকায় করা হাসপাতালে মানুষই যদি সেবা ঠিকমতো না পায়, তাহলে বুঝতে হবে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ভালো কাজ করতে পারছে না। আর, প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আপনারা দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে না পারলে আপনার জায়গা ছেড়ে দিয়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে। এটি আমাদের পরিষ্কার নির্দেশনা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এর আগে চট্রগ্রাম বিভাগীয় হাসপাতাল অফিস পরিদর্শন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন করেন এবং চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তিকৃত রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
সভায় উপস্থিত বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে উপজেলা সরকারি হাসপাতালগুলোকে ১০ বেড হাসপাতাল থেকে ৩১ বেডে উন্নীত করার ঘোষণা দেন।
এদিকে, সকালে চট্রগ্রাম বিভাগীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আলোচনায় অংশ নেন, এবং এর পর দুপুরে চট্রগ্রামের হাটহাজারিতে এভারকেয়ার বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধন করেন।
চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভায় অন্যান্যের মধ্যে চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম আমির খসরু, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর শামিউল ইসলাম সাদী, চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম হাসান, চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহানা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply