অনলাইন ডেস্ক।
সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে বান্দরবান শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। এতে তারা সম্মত হলেও সংগঠনটির ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছে কেএনএফ।
শুক্রবার সকাল ১০টায় বান্দরবান জেলা পরিষদ সভাকক্ষে দ্বিতীয় বারের মতো ভার্চুয়াল বৈঠকে কেএনএফকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা।
এর আগে গত ১৯ জুলাই শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফর মধ্যে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের বৈঠকের ব্যাপারে জয় তঞ্চঙ্গ্যা একাত্তরকে বলেন, কেএনএফের দাবিগুলো লিখিত আকারে পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা এখনও পাঠায়নি। তবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঠানোর কথা জানিয়েছে। সেগুলো লিখিত আকারে পাঠালে সরকারে উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো এবং সরকারের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেবো। শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের সঙ্গে সংলাপ চলমান থাকবে।
তবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো প্রস্তাব নিয়ে সংলাপ চালানো সম্ভব না বলে জানান জয় তঞ্চঙ্গ্যা।
তিনি বলেন, প্রথম দফা বৈঠকে সংলাপ চলাকালে কেএনএফের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সংঘাত-অপহরণের ঘটনা যাতে না ঘটে তার নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছিল।
দ্বিতীয় দফা বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা (কেএনএফ) আগের বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। তাদের ফেসবুকে পেজে যেগুলো দিয়েছে, সেসব ব্যাপারে কথা বলেছে। কিন্তু আমরা তো এগুলো দেখিনি।
তিনি জানান, প্রথম সংলাপে কেএনএফ আলোচনার জন্য কিছু দাবি উত্থাপন করেছিল। সেই সংলাপে কেএনএফের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুনয়ার।
২০২২ সালের শুরুর দিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানা যায়। পরে অক্টোবরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, কেএনএফ বা ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত এই সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
এরপর জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার অভিযান চালায় র্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী। পরে এ অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও। অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সদস্যও। সংঘাতে প্রাণ হারায় বম পার্টির সদস্যরাও।
এই আতঙ্কে ভারতের মিজোরামে পালিয়ে যায় বম জনগোষ্ঠীর পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ। বন্ধ হয়ে যায় বান্দরবানের পর্যটকদের ভ্রমণও। জুম চাষের ক্ষতির পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ এলাকায় জনজীবন অস্থির ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ের ১১টি নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ ও অন্য পেশাজীবীরা জনজীবন স্বাভাবিক করার লক্ষে কেএনএফের সঙ্গে সংলাপের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করেন। চলতি বছরের মে মাসে মতবিনিময় করার পর জুনের শেষ সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটি গঠন ও এর উদ্দেশের কথা জানানো হয়।
এই কমিটির সদস্য ১৮ জন হলেও এতে পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ নেই।
একাত্তর/
Leave a Reply