চুয়াডাঙ্গা ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা দিয়ে ফের সক্রিয় সোনা পাচার সিন্ডিকেট

Padma Sangbad

এমপি আনার হত্যার পর প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোনা পাচার চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বরাবরের মতো গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে।
চুয়াডাঙ্গা, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত ব্যবহার করে চোরাচালানীরা সোনা পাচার করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। অতি সম্প্রতি এরকম পাচার চেষ্টার সময় বেশ কয়েকটি চালান আটক হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সদস্যদের হাতে। আটক হয়েছেন পাচার চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য।
স্থানীয়দের দাবি, যে পরিমাণ সোনা এই কয়েক সপ্তাহে আটক হয়েছে তার থেকে কয়েকশ’গুণ বেশি সোনা পাচার হয়েছে ভারতে। আর যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা মূলত ডেলিভারি ম্যান হিসেবে চক্রের সাথে যুক্ত। প্রকৃত পাচারকারীরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
চলতি বছরের ১১ মে চিকিৎসার জন্যে ভারতের কোলকাতায় যেয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার এই হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে যেসব তথ্য প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে তারমধ্যে অন্যতম সোনা চোরাচালান কেন্দ্রিক বিরোধ। এ বিষয়ে নানামুখি তথ্য প্রচার হয়। এর পরপরই সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি বেশ বৃদ্ধি পায়।
আইনশৃংলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সীমান্তকেন্দ্রিক তৎপরতার বিষয়ে ওয়াকিবহাল একাধিক সূত্র বলছে, আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন সোনা পাচারকারী একটি চক্রের প্রধান হিসেবে প্রচার হওয়ায় অনেক সিন্ডিকেট সাময়িক সোনা পাচার বন্ধ রাখে। সে কারণে প্রায় দেড় মাস সীমান্তে সোনা চোরাচালানের তেমন কোনো সংবাদ নজরে আসেনি। এই সেক্টরের দাগিরা এক প্রকার নিষ্প্রভ হয়ে যায়। সম্প্রতি, আনোয়ারুল আজিম আনার ইস্যুটি অনেকটা ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সোনা সোনাকারবারিরা। পুরোদমে শুরু করেছে সোনা চোরাচালান। যশোরসহ সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর এবং কুষ্টিয়া জেলার সীমান্ত এলাকাকে টার্গেট করে কাজ করছে একাধিক চক্র। এসব সীমান্তে গত দশ দিনে এক বা দুই দিনের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি সোনার চালান বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক এবং বহনকারী আটক হয়েছেন। তবে, সোনার পাচার বৃদ্ধির সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজিবিও। তারাও আবার নজরদারি বৃদ্ধি করেছেন। চোরাকারবারি আটক ও সোনা উদ্ধারে সাফল্যের তালিকায় রয়েছে যশোর ৪৯ বিজিবি, ২১ খুলনা বিজিবি ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
তবে, উদ্ধারের বাইরেও সীমান্তের বিভিন্ন চোরাচালানি ঘাট ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দীর্ঘদিন বিপুল পরিমাণ সোনারবার ভারতে পাচার করেছে চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্য ও বহনকারীরা। সূত্র বলছে, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এসব অভিযানে শুধু বহনকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের রাঘববোয়ালরা। সম্প্রতিও একই অবস্থা। অনেকগুলো অভিযানে শুধু বহনকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। এই পর্যায়েও কোনো গডফাদার বা প্রকৃত চোরাকারবারিরা আটক হয়নি। তাদের বিষয়ে কোনো ধারণাও লাভ করা যায়নি বলে এ বিষয়ে ধারণা রাখে এমন ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, বিগত সময়ের মতই সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার ভারতীয় সীমান্ত সোনা চোরাচালানের অন্যতম পথ বা রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পাচার হওয়া সব সোনা যাচ্ছে ভারতে। ভারতে সোনার ওপর শুল্ক-কর সাড়ে ১৮ শতাংশ হওয়ায় চোরাচালানি চক্র উৎসাহিত হয়ে আসছে। চোরাচালানের মাধ্যমে ঢোকা প্রতি কেজি সোনার দাম ৮ থেকে ৯ লাখ রুপি কম পড়ে বলেও তথ্য মিলেছে।
৮ জুন ভারতের কলকাতাভিত্তিক সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকার সংবাদে সেখানকার তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, আনোয়ারুল আজিম সীমান্তে সোনা পাচারের সাথে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি একটি টাকা পাচার চক্রেরও প্রধান ছিলেন। এছাড়া আনোয়ারুল খুনে সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামানও সোনা পাচারে যুক্ত ছিলেন।
আবার এদেশের সিআইডির তদন্তকারী ইউনিট থেকে বলা হয় ১১ মে আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন। ১৩ মে আনোয়ারুলকে খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়েছে এমন তথ্যও পান আটকদের কাছ থেকে। আরও তথ্য দেওয়া হয়, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও অন্ধকার জগতের লোক। খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আনোয়ারুলের বাল্যবন্ধু আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন একটি সোনা পাচারকারী চক্রের প্রধান। ওইসব তথ্য ফলাও করে প্রকাশিত হতে থাকলে মে মাসের মাঝিমাঝি সময় থেকে জুন মাসের শেষ দিক পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তগুলো দিয়ে সোনা পাচার বন্ধ ছিল বললেই চলে।
মূলত ভারতের সাথে দেশের যে ৩২টি জেলার সীমান্ত রয়েছে এর মধ্যে যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর এবং কুষ্টিয়া অন্যতম। চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা জীবননগর। আর যশোরের চৌগাছা, শার্শা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, কালীগঞ্জ, সদর, চুয়াডাঙ্গার, দর্শনা, দামুড়হুদা, জীবননগর, মেহেরপুরের মুজিবনগর এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাথে ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এসব সীমান্ত এলাকার যোগাযোগ খুবই সহজ। পরিবহন ব্যবস্থাও খুব ভালো। পাশাপাশি সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিমবাংলার রাজধানী কোলকাতাও খুব কাছে। সে কারণে পাচারকারীরা এসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে সোনা বা অন্যান্য পণ্য চোরাচালানে তুলনামূলক একটু বেশি সক্রিয় থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোনা পাচারকারীরা যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্ত এলাকায় আবারও তৎপরতা শুরু করেছে বলে সূত্র জানায়।
স্থানীয় পুলিশ, বিজিবি ও অন্য সূত্রগুলো জানিয়েছে, মহেশপুরের সাথে ভারতের সীমান্ত ৫৭ কিলোমিটারের। এর মধ্যে ১১ কিলোমিটার এলাকা কাঁটাতারবিহীন। এই সীমান্ত দিয়ে চোলাচালান আবার শুরু হয়েছে জোরেসোরে। এক্ষেত্রে পথ বা রুট হিসেবে কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও জীবননগরকে ব্যবহার করা হয়। আর কালীগঞ্জ উপজেলাটি ট্রানজিট হিসেবে চোরাচালানকারীদের কাছে খুব পছন্দের। কারণ এই উপজেলা দিয়ে ইচ্ছা করলে দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলার যে কোনো সীমান্তে দ্রুত ও সহজে যাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে, একটি রুটে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেই অন্য রুটে পণ্য পাচারে সক্রিয় হয় তারা।
সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া উল্লেখযোগ্য চালানগুলো ও তার সাথে আটকদের ব্যাপারে জোরেসোরে তদন্ত চলছে। গত ৩ জুলাই ভারতে পাচারের সময় সাতক্ষীরার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৭টি সোনারবার উদ্ধার করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এ সোনার ওজন ৮১৮ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ৮২ লাখ ৪৫ হাজার একশ’ টাকা।
৭ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে এক কেজি ৬৭ গ্রাম ৫শ মিলিগ্রাম ওজনের একটি সোনার বার জব্দের পাশাপাশি এক চোরাচালানিকে আটক করেন বিজিবি জোয়ানরা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরার লক্ষীদাড়ি মধ্যপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে এই সোনাসহ তাকে আটক করা হয়। আটক সোনার দাম এক কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
গত ১০ জুলাই চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর সীমান্ত থেকে আড়াই কেজি ওজনের ৮ টি স্বর্ণের বারসহ আকরাম হোসেন (৩০) নামে এক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির ঠাকুরপুর সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন। আটক সোনার বাজারমূল্য আড়াই কোটি টাকা।
৯ জুলাই খুলনা ব্যাটালিয়ান ২১ বিজিবি’র পুটখালী ক্যাম্পের সদস্যরা ১৮ পিস সোনার বারসহ লিমন হোসেন নামে এক পাচারকারীকে আটক করে। ওইদিন গভীর রাতে তাকে বারপোতা বাজার মোড়ে অভিযান চালিয়ে ওই আটক উদ্ধার সাফল্য দেখায় বিজিবি। উদ্ধার হওয়া সোনার ওজন ২ কেজি ১শ গ্রাম। যার মূল্য ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এছাড়া ৬ জুলাই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যৌথ অভিযান চালিয়ে ৯ কেজি ৬শ গ্রাম ওজনের সোনার বার উদ্ধার করেছে বিএসএফ এবং ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬ কোটি ৮৬ লাখ রুপির বেশি। ওই সোনা পাচারকারী সন্দেহে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
ওইদিন বিএসএফ বিবৃতি দিয়ে জানায় বিএসএফ বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের নদীয়া জেলায় মোতায়েন করা ৬৮ ব্যাটালিয়নের সতর্ক অবস্থানে ছিল বিএসএফ জওয়ানরা। কলকাতার রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (ডিআরআই) সাথে ৪টি যৌথ অভিযান চলে। ওই জেলার সীমানগরের ১১ নাম্বার রাজ্য সড়কে পরপর চারটি অনুসন্ধান অভিযানে ৭ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন আকৃতির ১৭ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৯ কেজি ৫৭২ গ্রাম। বাজারে আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ৮৬ লাখ ২৩ হাজার ৫৮২ রুপির মত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যেকোনো সীমান্ত দিয়ে ওই সব চালান হাতবদল হয়েছে দাবি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সূত্রের।
আাইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক সূত্রের দাবি, আনারুল আজিম হত্যাকান্ডের নেপথ্যে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট বিরোধ এমন তথ্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আসা ও আটকদের কাছ থেকে নানামুুখি তথ্য আসার পর গোটা স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রভাব পড়ে। প্রায় দেড় মাসের মতো অনেকটা বন্ধ ছিল চোরাচালান। ওই সময় তেমন কোনো চালান আটক হয়নি। আনারুল আজিম হত্যা ইস্যু একটু পুরোনো হওয়ায় আবার সিন্ডিকেটগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
সোনা চোরাচালানের খবরাখবরের প্রতি নজর রাখারা জানিয়েছেন, গাড়ির ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে, পেটের ভেতর বা পায়ুপথে, শরীরে বেঁধে, স্যান্ডেল বা জুতার সোলের ভেতরে রেখে নানা কৌশলে সোনা পাচার হচ্ছে। এসব প্রচলিত পদ্ধতির বাইরেও সোনা পাচার করা হয় আইনপ্রয়োগকারীদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যে। মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করে অবৈধভাবে সোনাগুলো আনা হয়। তারপর তা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাধ্যমে ভারতে সোনা চোরাচালান বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার জানিয়েছেন, মূলত গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণের চালানগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতে পাচার করার জন্য অপেক্ষা করা পাচারকারীদের আটক করা হয়েছে। টহলরত বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের পিলার থেকে সাব পিলার ১৫ থেকে ২ কিলোমিটার ভিতরে রাস্তার পাশে অবস্থান নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সীমান্তে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়ে চোরাচালান রোধে কাজ করছে বিজিবি। বড় বড় চালান উদ্ধার করছে। আটক ও উদ্ধার অব্যাহত থাকলে চোরাকারবারিদের কার্যক্রম অনেকাংশ কমে যাবে।

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান (পিএসসি) জানিয়েছেন, বিজিবি সতর্ক অবস্থানে থেকে চোরাচালান রোধে কাজ করে যাচ্ছে। গত বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ঠাকুরপুর বাগানপাড়ার মধ্য দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন তথ্য পায় বিজিবি। ওই সংবাদে বিওপি কমান্ডার সুবেদার সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সীমান্তে মেইন পিলার ৯০ থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠাকুরপুর বাগানপাড়া বটগাছ তলার নিচে অ্যাম্বুস নিয়ে বড় একটি চালান উদ্ধার করে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।।

আপডেট : ১২:২৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা দিয়ে ফের সক্রিয় সোনা পাচার সিন্ডিকেট

আপডেট : ১২:২৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

এমপি আনার হত্যার পর প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোনা পাচার চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বরাবরের মতো গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে।
চুয়াডাঙ্গা, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত ব্যবহার করে চোরাচালানীরা সোনা পাচার করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। অতি সম্প্রতি এরকম পাচার চেষ্টার সময় বেশ কয়েকটি চালান আটক হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সদস্যদের হাতে। আটক হয়েছেন পাচার চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য।
স্থানীয়দের দাবি, যে পরিমাণ সোনা এই কয়েক সপ্তাহে আটক হয়েছে তার থেকে কয়েকশ’গুণ বেশি সোনা পাচার হয়েছে ভারতে। আর যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা মূলত ডেলিভারি ম্যান হিসেবে চক্রের সাথে যুক্ত। প্রকৃত পাচারকারীরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
চলতি বছরের ১১ মে চিকিৎসার জন্যে ভারতের কোলকাতায় যেয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার এই হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে যেসব তথ্য প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে তারমধ্যে অন্যতম সোনা চোরাচালান কেন্দ্রিক বিরোধ। এ বিষয়ে নানামুখি তথ্য প্রচার হয়। এর পরপরই সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি বেশ বৃদ্ধি পায়।
আইনশৃংলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সীমান্তকেন্দ্রিক তৎপরতার বিষয়ে ওয়াকিবহাল একাধিক সূত্র বলছে, আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন সোনা পাচারকারী একটি চক্রের প্রধান হিসেবে প্রচার হওয়ায় অনেক সিন্ডিকেট সাময়িক সোনা পাচার বন্ধ রাখে। সে কারণে প্রায় দেড় মাস সীমান্তে সোনা চোরাচালানের তেমন কোনো সংবাদ নজরে আসেনি। এই সেক্টরের দাগিরা এক প্রকার নিষ্প্রভ হয়ে যায়। সম্প্রতি, আনোয়ারুল আজিম আনার ইস্যুটি অনেকটা ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সোনা সোনাকারবারিরা। পুরোদমে শুরু করেছে সোনা চোরাচালান। যশোরসহ সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর এবং কুষ্টিয়া জেলার সীমান্ত এলাকাকে টার্গেট করে কাজ করছে একাধিক চক্র। এসব সীমান্তে গত দশ দিনে এক বা দুই দিনের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি সোনার চালান বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক এবং বহনকারী আটক হয়েছেন। তবে, সোনার পাচার বৃদ্ধির সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজিবিও। তারাও আবার নজরদারি বৃদ্ধি করেছেন। চোরাকারবারি আটক ও সোনা উদ্ধারে সাফল্যের তালিকায় রয়েছে যশোর ৪৯ বিজিবি, ২১ খুলনা বিজিবি ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
তবে, উদ্ধারের বাইরেও সীমান্তের বিভিন্ন চোরাচালানি ঘাট ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দীর্ঘদিন বিপুল পরিমাণ সোনারবার ভারতে পাচার করেছে চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্য ও বহনকারীরা। সূত্র বলছে, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এসব অভিযানে শুধু বহনকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের রাঘববোয়ালরা। সম্প্রতিও একই অবস্থা। অনেকগুলো অভিযানে শুধু বহনকারী শ্রমিকই আটক হয়েছে। এই পর্যায়েও কোনো গডফাদার বা প্রকৃত চোরাকারবারিরা আটক হয়নি। তাদের বিষয়ে কোনো ধারণাও লাভ করা যায়নি বলে এ বিষয়ে ধারণা রাখে এমন ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, বিগত সময়ের মতই সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার ভারতীয় সীমান্ত সোনা চোরাচালানের অন্যতম পথ বা রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পাচার হওয়া সব সোনা যাচ্ছে ভারতে। ভারতে সোনার ওপর শুল্ক-কর সাড়ে ১৮ শতাংশ হওয়ায় চোরাচালানি চক্র উৎসাহিত হয়ে আসছে। চোরাচালানের মাধ্যমে ঢোকা প্রতি কেজি সোনার দাম ৮ থেকে ৯ লাখ রুপি কম পড়ে বলেও তথ্য মিলেছে।
৮ জুন ভারতের কলকাতাভিত্তিক সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকার সংবাদে সেখানকার তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, আনোয়ারুল আজিম সীমান্তে সোনা পাচারের সাথে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি একটি টাকা পাচার চক্রেরও প্রধান ছিলেন। এছাড়া আনোয়ারুল খুনে সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামানও সোনা পাচারে যুক্ত ছিলেন।
আবার এদেশের সিআইডির তদন্তকারী ইউনিট থেকে বলা হয় ১১ মে আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন। ১৩ মে আনোয়ারুলকে খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়েছে এমন তথ্যও পান আটকদের কাছ থেকে। আরও তথ্য দেওয়া হয়, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও অন্ধকার জগতের লোক। খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আনোয়ারুলের বাল্যবন্ধু আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন একটি সোনা পাচারকারী চক্রের প্রধান। ওইসব তথ্য ফলাও করে প্রকাশিত হতে থাকলে মে মাসের মাঝিমাঝি সময় থেকে জুন মাসের শেষ দিক পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তগুলো দিয়ে সোনা পাচার বন্ধ ছিল বললেই চলে।
মূলত ভারতের সাথে দেশের যে ৩২টি জেলার সীমান্ত রয়েছে এর মধ্যে যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর এবং কুষ্টিয়া অন্যতম। চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা জীবননগর। আর যশোরের চৌগাছা, শার্শা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, কালীগঞ্জ, সদর, চুয়াডাঙ্গার, দর্শনা, দামুড়হুদা, জীবননগর, মেহেরপুরের মুজিবনগর এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাথে ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এসব সীমান্ত এলাকার যোগাযোগ খুবই সহজ। পরিবহন ব্যবস্থাও খুব ভালো। পাশাপাশি সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিমবাংলার রাজধানী কোলকাতাও খুব কাছে। সে কারণে পাচারকারীরা এসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে সোনা বা অন্যান্য পণ্য চোরাচালানে তুলনামূলক একটু বেশি সক্রিয় থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোনা পাচারকারীরা যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্ত এলাকায় আবারও তৎপরতা শুরু করেছে বলে সূত্র জানায়।
স্থানীয় পুলিশ, বিজিবি ও অন্য সূত্রগুলো জানিয়েছে, মহেশপুরের সাথে ভারতের সীমান্ত ৫৭ কিলোমিটারের। এর মধ্যে ১১ কিলোমিটার এলাকা কাঁটাতারবিহীন। এই সীমান্ত দিয়ে চোলাচালান আবার শুরু হয়েছে জোরেসোরে। এক্ষেত্রে পথ বা রুট হিসেবে কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও জীবননগরকে ব্যবহার করা হয়। আর কালীগঞ্জ উপজেলাটি ট্রানজিট হিসেবে চোরাচালানকারীদের কাছে খুব পছন্দের। কারণ এই উপজেলা দিয়ে ইচ্ছা করলে দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলার যে কোনো সীমান্তে দ্রুত ও সহজে যাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে, একটি রুটে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেই অন্য রুটে পণ্য পাচারে সক্রিয় হয় তারা।
সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া উল্লেখযোগ্য চালানগুলো ও তার সাথে আটকদের ব্যাপারে জোরেসোরে তদন্ত চলছে। গত ৩ জুলাই ভারতে পাচারের সময় সাতক্ষীরার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৭টি সোনারবার উদ্ধার করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এ সোনার ওজন ৮১৮ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ৮২ লাখ ৪৫ হাজার একশ’ টাকা।
৭ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে এক কেজি ৬৭ গ্রাম ৫শ মিলিগ্রাম ওজনের একটি সোনার বার জব্দের পাশাপাশি এক চোরাচালানিকে আটক করেন বিজিবি জোয়ানরা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরার লক্ষীদাড়ি মধ্যপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে এই সোনাসহ তাকে আটক করা হয়। আটক সোনার দাম এক কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
গত ১০ জুলাই চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর সীমান্ত থেকে আড়াই কেজি ওজনের ৮ টি স্বর্ণের বারসহ আকরাম হোসেন (৩০) নামে এক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির ঠাকুরপুর সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন। আটক সোনার বাজারমূল্য আড়াই কোটি টাকা।
৯ জুলাই খুলনা ব্যাটালিয়ান ২১ বিজিবি’র পুটখালী ক্যাম্পের সদস্যরা ১৮ পিস সোনার বারসহ লিমন হোসেন নামে এক পাচারকারীকে আটক করে। ওইদিন গভীর রাতে তাকে বারপোতা বাজার মোড়ে অভিযান চালিয়ে ওই আটক উদ্ধার সাফল্য দেখায় বিজিবি। উদ্ধার হওয়া সোনার ওজন ২ কেজি ১শ গ্রাম। যার মূল্য ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এছাড়া ৬ জুলাই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যৌথ অভিযান চালিয়ে ৯ কেজি ৬শ গ্রাম ওজনের সোনার বার উদ্ধার করেছে বিএসএফ এবং ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬ কোটি ৮৬ লাখ রুপির বেশি। ওই সোনা পাচারকারী সন্দেহে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
ওইদিন বিএসএফ বিবৃতি দিয়ে জানায় বিএসএফ বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের নদীয়া জেলায় মোতায়েন করা ৬৮ ব্যাটালিয়নের সতর্ক অবস্থানে ছিল বিএসএফ জওয়ানরা। কলকাতার রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (ডিআরআই) সাথে ৪টি যৌথ অভিযান চলে। ওই জেলার সীমানগরের ১১ নাম্বার রাজ্য সড়কে পরপর চারটি অনুসন্ধান অভিযানে ৭ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন আকৃতির ১৭ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৯ কেজি ৫৭২ গ্রাম। বাজারে আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ৮৬ লাখ ২৩ হাজার ৫৮২ রুপির মত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যেকোনো সীমান্ত দিয়ে ওই সব চালান হাতবদল হয়েছে দাবি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সূত্রের।
আাইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক সূত্রের দাবি, আনারুল আজিম হত্যাকান্ডের নেপথ্যে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট বিরোধ এমন তথ্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আসা ও আটকদের কাছ থেকে নানামুুখি তথ্য আসার পর গোটা স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রভাব পড়ে। প্রায় দেড় মাসের মতো অনেকটা বন্ধ ছিল চোরাচালান। ওই সময় তেমন কোনো চালান আটক হয়নি। আনারুল আজিম হত্যা ইস্যু একটু পুরোনো হওয়ায় আবার সিন্ডিকেটগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
সোনা চোরাচালানের খবরাখবরের প্রতি নজর রাখারা জানিয়েছেন, গাড়ির ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে, পেটের ভেতর বা পায়ুপথে, শরীরে বেঁধে, স্যান্ডেল বা জুতার সোলের ভেতরে রেখে নানা কৌশলে সোনা পাচার হচ্ছে। এসব প্রচলিত পদ্ধতির বাইরেও সোনা পাচার করা হয় আইনপ্রয়োগকারীদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যে। মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করে অবৈধভাবে সোনাগুলো আনা হয়। তারপর তা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাধ্যমে ভারতে সোনা চোরাচালান বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার জানিয়েছেন, মূলত গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণের চালানগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতে পাচার করার জন্য অপেক্ষা করা পাচারকারীদের আটক করা হয়েছে। টহলরত বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের পিলার থেকে সাব পিলার ১৫ থেকে ২ কিলোমিটার ভিতরে রাস্তার পাশে অবস্থান নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সীমান্তে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়ে চোরাচালান রোধে কাজ করছে বিজিবি। বড় বড় চালান উদ্ধার করছে। আটক ও উদ্ধার অব্যাহত থাকলে চোরাকারবারিদের কার্যক্রম অনেকাংশ কমে যাবে।

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান (পিএসসি) জানিয়েছেন, বিজিবি সতর্ক অবস্থানে থেকে চোরাচালান রোধে কাজ করে যাচ্ছে। গত বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ঠাকুরপুর বাগানপাড়ার মধ্য দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন তথ্য পায় বিজিবি। ওই সংবাদে বিওপি কমান্ডার সুবেদার সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সীমান্তে মেইন পিলার ৯০ থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠাকুরপুর বাগানপাড়া বটগাছ তলার নিচে অ্যাম্বুস নিয়ে বড় একটি চালান উদ্ধার করে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।।