চুয়াডাঙ্গা ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীমার আওতায় না থাকায় মিলবে না মেট্রোরেলের ক্ষতিপূরণ

Padma Sangbad

আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানের বীমা করে থাকে সাধারণ বীমা করপোরেশন। কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সাধারণ বীমা করপোরেশনে বীমা করেনি বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) মুখপাত্র ও পরিচালক জাহাঙ্গীর শাহ। ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ক্ষতির জন্য মিলবে না কোনো ক্ষতিপূরণ।

সাধারণ বীমা করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা বীমার আওয়তায় আনা হলেও মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

জানতে চাইলে করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুন-অর-রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকমকে বলেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ প্রজেক্ট চলাকালে বীমা করেছিল। কিন্তু মেট্রোরেল অপারেশনকে বীমার আওতায় আনেনি। যেহেতু অপারেশনকে বীমার আওতায় আনা হয়নি, তাই কোনো রকম ক্ষতিপূরণ পাবে না। বীমা করা থাকলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেত।

তিনি বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ও সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি) সব সময় সরকারি স্থাপনা এবং ঝুঁকি যেখানে আছে, সেখানে বীমা করার জন্য তাগিদ করে। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক জায়গায় ঝুঁকি থাকার পরেও বীমা করে না। বিদেশে সব রকম স্থাপনা বীমার আওতায় আনা হয়।

২০১৯ সালের বীমা আইন বলছে, সরকারি সম্পত্তি অথবা সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনো ঝুঁকি বা দায় সম্পর্কিত সকল প্রকার নন লাইফ বীমা ব্যবসায় ১০০ শতাংশ করবে সাধারণ বীমা করপোরেশন। এরপর এ ব্যবসা থেকে ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রেখে বাকি ৫০ শতাংশ সব বেসরকারি নন লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে সমহারে বণ্টন করবে।

এ আইনে আরো বলা হয়েছে, সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ কিংবা সংরক্ষণ রক্ষণাবেক্ষণের দায় সরকারের। এ ছাড়া সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো কোম্পানি, খামার, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা অন্য কোনো স্থাপনার বীমা সাধারণ বীমা করপোরেশন করবে।

তবে সরকারি সম্পত্তি বীমার আওয়তায় আনার বাধ্যবাধকতা রেখে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন এখনো নেই।

শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে গত ১৮ জুলাই মেট্রো লাইনের নিচে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরদিন সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় একদল মানুষ। তারা টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ওইদিন পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়।

বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর সময় লেগে যাবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক।

কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক যন্ত্রপাতিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় নেই। এগুলো নতুন করে আমদানি করতে হবে।

মেট্রোরেলের ক্ষতি নিরূপণে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়াকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এখনও পূর্ণাঙ্গ হিসাব শেষ করেননি। তবে প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতির অংক ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্মকর্তাদের ধারণা।

বীমা করা থাকলে এই অর্থের দায় বহন করত বীমা কোম্পানি। কিন্তু মেট্রোলের ক্ষেত্রে তা হবে না।

আপডেট : ০৮:০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

বীমার আওতায় না থাকায় মিলবে না মেট্রোরেলের ক্ষতিপূরণ

আপডেট : ০৮:০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানের বীমা করে থাকে সাধারণ বীমা করপোরেশন। কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সাধারণ বীমা করপোরেশনে বীমা করেনি বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) মুখপাত্র ও পরিচালক জাহাঙ্গীর শাহ। ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ক্ষতির জন্য মিলবে না কোনো ক্ষতিপূরণ।

সাধারণ বীমা করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা বীমার আওয়তায় আনা হলেও মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

জানতে চাইলে করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুন-অর-রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকমকে বলেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ প্রজেক্ট চলাকালে বীমা করেছিল। কিন্তু মেট্রোরেল অপারেশনকে বীমার আওতায় আনেনি। যেহেতু অপারেশনকে বীমার আওতায় আনা হয়নি, তাই কোনো রকম ক্ষতিপূরণ পাবে না। বীমা করা থাকলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেত।

তিনি বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ও সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি) সব সময় সরকারি স্থাপনা এবং ঝুঁকি যেখানে আছে, সেখানে বীমা করার জন্য তাগিদ করে। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক জায়গায় ঝুঁকি থাকার পরেও বীমা করে না। বিদেশে সব রকম স্থাপনা বীমার আওতায় আনা হয়।

২০১৯ সালের বীমা আইন বলছে, সরকারি সম্পত্তি অথবা সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনো ঝুঁকি বা দায় সম্পর্কিত সকল প্রকার নন লাইফ বীমা ব্যবসায় ১০০ শতাংশ করবে সাধারণ বীমা করপোরেশন। এরপর এ ব্যবসা থেকে ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রেখে বাকি ৫০ শতাংশ সব বেসরকারি নন লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে সমহারে বণ্টন করবে।

এ আইনে আরো বলা হয়েছে, সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ কিংবা সংরক্ষণ রক্ষণাবেক্ষণের দায় সরকারের। এ ছাড়া সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো কোম্পানি, খামার, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা অন্য কোনো স্থাপনার বীমা সাধারণ বীমা করপোরেশন করবে।

তবে সরকারি সম্পত্তি বীমার আওয়তায় আনার বাধ্যবাধকতা রেখে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন এখনো নেই।

শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে গত ১৮ জুলাই মেট্রো লাইনের নিচে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরদিন সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় একদল মানুষ। তারা টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ওইদিন পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়।

বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর সময় লেগে যাবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক।

কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক যন্ত্রপাতিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় নেই। এগুলো নতুন করে আমদানি করতে হবে।

মেট্রোরেলের ক্ষতি নিরূপণে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়াকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এখনও পূর্ণাঙ্গ হিসাব শেষ করেননি। তবে প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতির অংক ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্মকর্তাদের ধারণা।

বীমা করা থাকলে এই অর্থের দায় বহন করত বীমা কোম্পানি। কিন্তু মেট্রোলের ক্ষেত্রে তা হবে না।