আজ ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত

অনলাইন ডেস্ক।।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনার কথা জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভার অন্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন বলে গণ্য হবে। এতে মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন বলেও সংবিধানে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন। সেনাপ্রধান বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তে এসেছেন তারা। এই প্রস্তাব নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবেন সেনাপ্রধান। এরপরই ঘোষণা হবে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন। এসময় সেনাপ্রধান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। রাতে না হলে আ হতে পারে। সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতে গত কিছুদিনে সারাদেশে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানি হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গতকাল সোমবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই মধ্যে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার, ঘোষণা করা হয় তিনদিনের সাধারণ ছুটি। কিন্তু সোমবার কারফিউ ভেঙে হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর শাহবাগের দিকে যেতে থাকেন। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে দেশ ছাড়েন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-(ক) তিনি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন। অন্য মন্ত্রীদের পদের মেয়াদ নিয়ে সংবিধানের ৫৮ (৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলি-সাপেক্ষে তাহাদের উত্তরাধিকারীগণ কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন। ‘মন্ত্রী’ বলিতে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত। গত বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। এরপর ১১ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। ওই মন্ত্রিসভায় সদস্য ছিল প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ জন। পরে ১ মার্চ আরও সাতজন প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা হয় প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৪ জন। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৫ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পাঁচ বছরের জন্য মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। তবে এ মন্ত্রিসভা প্রায় সাত মাসের মাথায় বিলুপ্ত হলো। সেনাপ্রধানের ভাষণের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকারে কারা থাকছেন সেই আলোচনা চলছে সর্বত্র। এর মধ্যে ১৮ জনের একটি নামের তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।অন্তর্র্বতীকালীন সরকারে যাদের নাম আলোচনায় আছে তারা হলেন,বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বুয়েটের অধ্যাপক ইকরামুল হক, সাবেক পরিবেশ সচিব ড. মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের সাবেক পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা, বিজিবির সাবেক ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মঈনুল ইসলাম, নিউএইজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির, সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোরশেদ খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা এবং চাকমা সার্কেল চিফের উপদেষ্টা রানি ইয়ান ইয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :