অনলাইন ডেস্ক:
দেশের শীর্ষ কওমী আলেম ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীকে শেষ বিদায় জানাতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার অভিমুখে। এর আগে সকালে আহমদ শফীর মরদেহ ঢাকা থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসে পৌঁছে। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন লাখো ভক্ত-অনুসারীরা। জনতার ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
এরইমধ্যে তার জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং সার্বিক নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের চার উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এরইমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে হাটহাজারী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া এবং ফটিকছড়িতে সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিজিবি সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। তার জানাজায় যোগ দিতে আসা জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাটহাজারী বাস স্টেশন থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরও নিয়োজিত করা হয়েছে। শোকার্ত মানুষ দলে দলে কোরআন তেলাওয়াত, খতম ও দোয়া ইত্যাদি করছে। এ দিন আর আসবে না, এ ক্ষণ আর মিলবে না। তাই ভিড় উপচেপড়া, কান্নার রোল পরিবেশকে ভাড়ী করে তুলেছে মহামান্য প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদল, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ তার বিদায়ে শোকাহত। আজ কোনো ভেদাভেদ নেই। তার মতো মানুষের মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। তিনি আজ সবকিছুর ঊর্ধ্বে, একবুক কষ্ট আর সীমাহীন অভিমান নিয়ে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তবে যাওয়ার সময়ও মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে গেছেন। তিনি কাঁদতে জানেন, কাঁদাতে জানতেন না। এমন গুণ ছিলো বলেই তিনি জাতির সর্বজন মান্য নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। আল্লামা কওমি আলেমদের মর্যাদা রাষ্ট্রীয়ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার হাত ধরে, তার নেতৃত্বে এসেছে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদের সরকারি স্বীকৃতি। বাংলাদেশকে তিনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য উচ্চতায়। তাই তার মৃত্যুতে শোকাতুর হয়েছে দেশবাসী। তার মৃত্যুতে কাঁদছে পুরো দেশ। তাই লাখো ভক্তের ভালোবাসায় সিক্ত। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় আল্লামা শফীর মৃত্যু হয়।
তিনি হেফজাতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ছাড়াও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক ও কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ছিলেন।
Leave a Reply