দুর্বার গতিতে টগবগিয়ে ছুঁটছে ঘোড়া। সেই ঘোড়দৌড় উপভোগে উৎসবমুখর ছিলেন মানুষ। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে গ্রামীণ বিভিন্ন সড়ক ও মেঠোপথে মানুষের সারি। বেলা বারোটার পর থেকেই এমন চিত্র চোখে পড়ে। বিভিন্ন বয়স ও নানান শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ আসেন। সবারই উদ্দেশ্য গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করা।
মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামের বিস্তৃর্ণ খোলা মাঠে (কানা বিলে) রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকালে অনুষ্ঠিত হয় খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ও শতবছরের প্রচীণতম ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। এই ঘোড়দৌড় উপভোগে মানুষের ঢল নামে।
দেশের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট কার্পেটিংসহ ইট বসানোয় ঘোড়দৌড়ের আয়োজনও কমে গেছে। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়রিয়া গ্রামের কানাবিলের মাঠজুড়ে অগণিত মানুষ। সব মানুষই অন্যরকম উচ্ছ্বাস-আনন্দে মাতোয়ারা। আমুদে দর্শকদের হাজার হাজার অপেক্ষমান চোখ। দূর-দূরান্তের দর্শক ও দর্শণার্থীদের পাশাপাশি এ অঞ্চলের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষের মন ছুটে যায় ঘোড়দৌড়ে। স্থানীয় প্রবীণদের মতে, এবার একশ’ ষোলতম বারের মতো ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো।
উপজেলা ও উপজেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ২০টি ঘোড়ার উপস্থিতি চোখে পড়লো। ঘোড়দৌড়ের পথে ঘোড়া মালিক, ফকির ও ছোয়াররা (জকি) ঘোড়াকে তার পথপরিক্রমায় প্রাথমিক মহড়ায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। বেলা পৌনে তিনটার সময় শুরু হয় কাঙ্খিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। ছোয়ারের (জকি) বাঁশির ছন্দময় আওয়াজে দূরন্ত ঘোড়ার দল ছুঁটেছে টগবগিয়ে, দুর্বার গতিতে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তা ও বিলের বিশাল প্রান্তরে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন তা। শীতের বিকালে মিস্টি দৌদ্দুরে এক অন্যরকম উৎসব আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শকরা। দু’চোখ ভরে উপভোগ করেন মুগ্ধকর এ প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখলকারী ঘোড়া মালিকের হাতে পুরস্কার হিসেবে এলইডি টিভি তুলে দেয় আয়োজক কমিটি।
Leave a Reply