আজ ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বেগম খালেদা জিয়া এখন ‘অনেকটা বেটার’ : মির্জা ফখরুল

দেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন। তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতির দিকে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলীয় শীর্ষ নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্য-সেবায় ঐতিহ্যবাহী ও সর্ববৃহৎ হাসপাতাল ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা-সেবা শুরুর ৭ দিনের-মাথায় তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘অনেকটা বেটার’।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া ‘অনেকটা বেটার’ আছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারাও পত্র-পত্রিকায় খবর দিচ্ছেন, আমরাও খবর নিয়েছি, উনি (বেগম খালেদা জিয়া) মানসিক এবং শারীরিক উভয় দিক থেকেই আলহামদুলিল্লাহ আগের চাইতে অনেকটা বেটার (ভালো)।’

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের সেন্ট্রাল-ওয়েস্টস্থ বিশেষায়িত হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান। অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য-সেবা সম্বলিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি গত ৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১২টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং তাঁর সফর-সঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করে। কাতারের দোহায় যাত্রা-বিরতিসহ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি পরের দিন ৮ জানুয়ারি লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিট) হিথ্রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি লন্ডন কিøনিকে নেওয়া হয়। তাঁর বড় ছেলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গাড়ী চালিয়ে মা’কে হাসপাতালে নেন। বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ অর্থাৎ তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমানও এ সময় সঙ্গে ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বড় ছেলের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো’র স্ত্রী শর্মিলা রহমান, নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমান (তারেক রহমানের মেয়ে) এবং জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানের (দু’জনেই আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে) সার্বক্ষণিক সান্নিধ্যে মানসিকভাবেও প্রশান্তিতে রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তিনি ছেলের বাসায় রান্না করা খাবার খাচ্ছেন। সকাল এবং বিকেলের নাস্তাও বাসা থেকে দেওয়া হচ্ছে। ছেলে তারেক রহমান (বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) নিজেই খাবার নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের সফরসঙ্গী, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এনামুল হক চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতারা লন্ডনে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এবং বিভিন্ন সময়ে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের মাধ্যমে ঢাকার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো ভিডিও বার্তায় এ সব তথ্য তুলে ধরেন।

৭৯ বছর বয়সী এই নেত্রী (বেগম খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর অসুস্থতা আরো বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে তিনি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন কয়েকবার। এ জন্য রাজধানী ঢাকায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের অন্যতম চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ সময় তাঁকে চিকিৎসাধীনও থাকতে হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :