আজ ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে অভিযান

দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, ‘ন্যাশনাল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেনেন্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’ এর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা -কর্মচারী কর্তৃক চীন থেকে আমদানিকৃত আইসোফ্লুরেন ভ্যাপোরাইজার মেশিনের গায়ে জার্মানির বিখ্যাত ব্র্যান্ডের নকল স্টিকার লাগিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরবরাহের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযান চলাকালে সরবরাহকৃত মেশিনগুলো সরেজমিনে পরীক্ষা করে দেখা যায়, একই বছরে সরবরাহ করা মেশিনগুলোর গায়ে ব্র্যান্ডের নাম, মডেল নম্বর, সিরিয়াল নম্বর, এবং উৎপাদনকারী দেশের নাম ভিন্ন ভিন্ন ছিল। এমনকি কিছু মেশিনে কোনো নাম বা স্টিকারই ছিল না। যেগুলোর গায়ে ‘হায়ার’ উল্লেখ ছিল, সেগুলোতেও উৎপাদনের কোনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। বাহ্যিক পর্যবেক্ষণে এটি প্রতীয়মান হয় যে, এসব মেশিন জার্মানিতে তৈরি নয়; বরং চীন বা অন্য কোনো দেশে তৈরি। সার্বিক বিবেচনায়, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

একই অভিযোগে সিলেটের খাদিমপাড়া ৩১-শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল দুর্নীতি দমন কমিশনের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সরবরাহকৃত নতুন মেশিন ও যন্ত্রাংশ এবং পুরাতন যন্ত্রাংশের স্টিকার তুলনা করে দেখা যায়, নতুন যন্ত্রাংশের স্টিকার হাতে লাগানো এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অভিযানের ভিত্তিতে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে গোপালগঞ্জে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানকালে টিমের কাছে পরিলক্ষিত হয়, রিসোর্ট নির্মাণে সরকারের কয়েক লাখ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন গ্রামে টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন বিতরণে সরকার নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি অর্থ নেওয়ার অভিযোগও সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ব্যক্তিগত মালিকানার সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে সরকারি অর্থ ব্যয় করে পানির লাইন ও পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়েছে, এ ধরনের তথ্যও পায় দুদক টিম।

এছাড়া কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়নে ২০-শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পেও গুরুতর অনিয়মের অভিযোগে একই কার্যালয় হতে অপর একটি অভিযান পরিচালিত হয়। টিম জানতে পারে, এই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালে শুরু হলেও এখনো ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়নি, তবে প্রকল্পের ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার পুরো বিল পরিশোধ করা হয়েছে। সময় বাড়ানো সত্ত্বেও ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখেছেন এবং ব্যয় বৃদ্ধি করে সরকারের অর্থের অপচয় ঘটিয়েছেন মর্মে অভিযানকালে টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে দুদক জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :