দৈনিক পদ্মা সংবাদ ডেস্ক। ।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ির বাঁধে মাছ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে। হাজারো মানুষ জাল, পলো ও মাছের খলই এবং ছোট ছোট ছিপ নিয়ে অংশ নেন এ উৎসবে। শুক্রবার মধ্য রাতে সদর উপজেলা আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় নির্মিত বাঁধের গেট খুল দেওয়া হয়। শনিবার সকাল থেকে এমন মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়ে। মাছ ধরা চলবে পানি না শুকানো পর্যন্ত।জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে ১৯৫১ সালে শুরু হয় এই বাঁধ নির্মাণের কাজ। পরে ১৯৫৭ সালের দিকে শেষ হয়ে ১৯৭৮ সালের দিকে সেচ কার্যক্রম শুরু হয় এখানে।
এরপর থেকেই শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচসুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝ সীমানায় শুক নদীতে বুড়ির বাঁধ নামের একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। এই জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করে থাকেন। আর এ পোনাগুলো যাতে কেউ শিকার করতে না পারে তাই এর দেখাশোনার দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের। শীতের শুরুতেই এসব মাছ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার উৎসব চলে আসছে। সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে আসা সফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতেই এখানে এসেছি। ভোর থেকে মাছ রা শুরু করেছি। পুটি মাছ, দেশীয় গুড়া মাছ, ছোট রুই মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতের মাছ জালে আটকা পড়েছে।আখানগর থেকে আসা জয়নাল উদ্দীন জানান, প্রতিবছর তিনি এখানে মাছ ধরতে আসেন। এ বছরও এসেছেন, তবে গত বছরের তুলনায় এবার মাছ খুব কম উঠছে জালে।ঠাকুরগাঁও চিলারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এখানে শুধু ইউনিয়ন বাসীরাই নয়, ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়, নিলফামারি থেকেও অনেকেই এসেছেন এখানে। কেউ মাছ ধরতে, কেউ বা এসেছেন মাছ কিনতে, আবার অনেকেই আসে মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে।
জেলা মৎস কর্মকর্তা আফতাব হোসেন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মৎস সপ্তাহ উপলক্ষে এই বাঁধে চাহিদা অনুযায়ি ২০ থেকে ২৫ কেজি বিভিন্ন মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। এখানে সম্প্রতি একটি মাছের অভয়ারণ্য করা হয়েছে, যেখানে স্থানীয়ভাবে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটিই সারা বছর অভয়ারণ্য পরিচর্যা করে থাকে। শীতের শুরুতে বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এখানে মাছ ধরতে আসে অনেকে।
Leave a Reply