চুয়াডাঙ্গা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা বিএনপি নেতা মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু আর নেই: শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে

Padma Sangbad

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রনেতা মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু (৪৮) আর নেই। গতকাল, রবিবার, ভোরে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসভবনে ঘুমের মধ্যেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গার রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি স্ত্রী ও তিন পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন ফরিদুল ইসলাম শিপলু। শনিবার রাতে তিনি ধানমন্ডিতে তার ছোট ভাইয়ের বাসায় একাই অবস্থান করছিলেন। রাত দেড়টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। এরপর সকালে পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি।

জানা যায়, গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে তার ছোট ভাই রাতুল এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং শিপলুকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। গত দেড় বছর ধরে তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন। গত বছর হার্টে ব্লক ধরা পড়লে রিংও পরানো হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে ঠিক কখন তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।

মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা গতকাল বিকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর বাবর রোডের আল মারকাজুল ইসলাম আল মাদানি মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লাশবাহী গাড়িতে করে তাঁর মরদেহ চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মধ্যরাতে পৌঁছানোর কথা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে তাঁর দ্বিতীয় এবং প্রধান নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে দাফন করা হবে।

চুয়াডাঙ্গার কোর্টপাড়া নিবাসী মরহুম আব্দুল হক ও আমেনা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মির্জা শিপলু। তাঁর মেজো ভাই মির্জা বিপুল নেত্রকোনার পুলিশ সুপার। তিনি তিন সন্তানের জনক—একজন নবম শ্রেণির ছাত্র, একজন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র এবং ছোটজনের বয়স মাত্র ৬ বছর। এই অকাল মৃত্যুতে তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম, যা চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে এক শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর গতকাল দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং জেলা বিএনপির এই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন মিষ্টভাষী ও অমায়িক, যার কারণে নেতা-কর্মীরা তাঁকে দীর্ঘকাল মনে রাখবেন বলে জানান জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক শোকবার্তায় বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল মরহুম মির্জা শিপলু চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনেও তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। তিনি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়াও, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

মির্জা শিপলুর মৃত্যুতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। সভাপতি মোঃ শাহাজান খান ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, একজন সাচ্চা জাতীয়তাবাদী, অমিত সম্ভাবনাময়ী তরুণ তুর্কি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর মৃত্যুতে বিএনপির অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামী এর আমীর মো: রুহুল আমিন সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এবং জেলা বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও এই অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন।

আপডেট : ০৩:২৭:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা বিএনপি নেতা মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু আর নেই: শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে

আপডেট : ০৩:২৭:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রনেতা মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু (৪৮) আর নেই। গতকাল, রবিবার, ভোরে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসভবনে ঘুমের মধ্যেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গার রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি স্ত্রী ও তিন পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন ফরিদুল ইসলাম শিপলু। শনিবার রাতে তিনি ধানমন্ডিতে তার ছোট ভাইয়ের বাসায় একাই অবস্থান করছিলেন। রাত দেড়টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। এরপর সকালে পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি।

জানা যায়, গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে তার ছোট ভাই রাতুল এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং শিপলুকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। গত দেড় বছর ধরে তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন। গত বছর হার্টে ব্লক ধরা পড়লে রিংও পরানো হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে ঠিক কখন তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।

মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা গতকাল বিকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর বাবর রোডের আল মারকাজুল ইসলাম আল মাদানি মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লাশবাহী গাড়িতে করে তাঁর মরদেহ চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মধ্যরাতে পৌঁছানোর কথা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে তাঁর দ্বিতীয় এবং প্রধান নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে দাফন করা হবে।

চুয়াডাঙ্গার কোর্টপাড়া নিবাসী মরহুম আব্দুল হক ও আমেনা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মির্জা শিপলু। তাঁর মেজো ভাই মির্জা বিপুল নেত্রকোনার পুলিশ সুপার। তিনি তিন সন্তানের জনক—একজন নবম শ্রেণির ছাত্র, একজন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র এবং ছোটজনের বয়স মাত্র ৬ বছর। এই অকাল মৃত্যুতে তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম, যা চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে এক শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর গতকাল দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং জেলা বিএনপির এই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন মিষ্টভাষী ও অমায়িক, যার কারণে নেতা-কর্মীরা তাঁকে দীর্ঘকাল মনে রাখবেন বলে জানান জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক শোকবার্তায় বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল মরহুম মির্জা শিপলু চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনেও তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। তিনি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়াও, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

মির্জা শিপলুর মৃত্যুতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। সভাপতি মোঃ শাহাজান খান ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, একজন সাচ্চা জাতীয়তাবাদী, অমিত সম্ভাবনাময়ী তরুণ তুর্কি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর মৃত্যুতে বিএনপির অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামী এর আমীর মো: রুহুল আমিন সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এবং জেলা বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও এই অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন।