চুয়াডাঙ্গা ০৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, নেপথ্যে ক্লিনিক ব্যবসা

Padma Sangbad

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়েছে জেলাবাসীর ব্যানারে । সোমবার(০৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় এই মানববন্ধন ও ঘেরাও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনা স্থানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আচমকা সকালে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার মূল ধারার গণমাধ্যম কর্মীরা।

ঘটনার নেপথ্যের কারন খুঁজতে বেড়িয়ে আসে জেলার বহুল আলোচিত বিতর্কিত ডাক্তার সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ ফয়সাল আহমেদের ক্লিনিক ব্যবসা ও দালাল নিয়ন্ত্রণের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সূত্র জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলার স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন বিষয়ক একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও কর্মরত সিনিয়র চিকিৎসক, সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা । সেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে ৫টি বিষয় বাস্তবায়নে সিভিল সার্জন ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকে চিঠি(স্মারক নং- সঃহাঃসঃ/সাত/শা-৩/২০২৫) দেন জেলা প্রশাসক, যার মধ্যে অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক নামক দালাল অপসারণ । সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ২২ সেপ্টেম্বর সিভিল সার্জন কর্তৃক সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে একটি আদেশ পত্র জারি করা হয়। ওই দিনই সিভিল সার্জনের কক্ষে অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সামনে মারমুখী কায়দায় সিভিল সার্জনকে জারি করা পত্র বাতিল করতে বলেন হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক অফিসার ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদ, সিভিল সার্জন অসম্মতি জানালে তাকে গালাগাল করে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায় ডাঃ ফয়সাল। এবিষয়ে গতকাল রবিবার(০৫ অক্টোবর) মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি দেন সিভিল সার্জন। চিঠির বিষয় জানতে পেরে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ। রাতারাতি তার নিয়ন্ত্রিত দালাল চক্রকে দিয়ে ভাড়া করা লোকদিয়ে একটি মানববন্ধন ও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি করানো হয়।

এদিকে আওয়ামী পন্থি চিকিৎসক সংগঠনের প্রতাপশালী নেতা ও জেলা কমিটির গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদে ও তার ক্লিনিকে হওয়া নানাবিধ অপকর্মের কারনে জেলাজুড়ে বহুল আলোচিত। তার বিরুদ্ধে এর আগে তুলে নিয়ে সাংবাদিক পেটানো, গ্রাম ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করে রোগীদের অঙ্গহানি, ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী হত্যা সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে। তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মব সৃষ্টি করে আমার অফিসে একটি ঘটনা ঘটিয়েছে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদ। তিনি আরো জানান দালাল বন্ধ করায় তার ক্লিনিক ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে বলে এই অপপ্রচার করা হয়েছে। আমি ডিসি স্যার ও উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আবাসিক কর্মকর্তা ডাক্তার শেখ ফয়সাল আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি একটু পরে কথা বলতে বলেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মানববন্ধনকারীদের আমরা বললে তারা শান্তি পূর্ণ ভাবে চলে যায়। মানববন্ধন কর্মসূচি সম্পর্কে তাদের আগে থেকে কোন তথ্য ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি আগে জানতেন না বলে জানান।

এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রিপন বিশ্বাস বলেন, সরকারি নিয়মে স্বেচ্ছাসেবক নামে কিছু নেই এগুলো দালাল। জেলা প্রশাসক স্যার তাদের কে অপসারণে চিঠি দিয়েছেন।

আপডেট : ১২:০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, নেপথ্যে ক্লিনিক ব্যবসা

আপডেট : ১২:০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়েছে জেলাবাসীর ব্যানারে । সোমবার(০৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় এই মানববন্ধন ও ঘেরাও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনা স্থানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আচমকা সকালে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার মূল ধারার গণমাধ্যম কর্মীরা।

ঘটনার নেপথ্যের কারন খুঁজতে বেড়িয়ে আসে জেলার বহুল আলোচিত বিতর্কিত ডাক্তার সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ ফয়সাল আহমেদের ক্লিনিক ব্যবসা ও দালাল নিয়ন্ত্রণের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সূত্র জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলার স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন বিষয়ক একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও কর্মরত সিনিয়র চিকিৎসক, সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা । সেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে ৫টি বিষয় বাস্তবায়নে সিভিল সার্জন ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকে চিঠি(স্মারক নং- সঃহাঃসঃ/সাত/শা-৩/২০২৫) দেন জেলা প্রশাসক, যার মধ্যে অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক নামক দালাল অপসারণ । সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ২২ সেপ্টেম্বর সিভিল সার্জন কর্তৃক সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে একটি আদেশ পত্র জারি করা হয়। ওই দিনই সিভিল সার্জনের কক্ষে অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সামনে মারমুখী কায়দায় সিভিল সার্জনকে জারি করা পত্র বাতিল করতে বলেন হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক অফিসার ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদ, সিভিল সার্জন অসম্মতি জানালে তাকে গালাগাল করে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায় ডাঃ ফয়সাল। এবিষয়ে গতকাল রবিবার(০৫ অক্টোবর) মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি দেন সিভিল সার্জন। চিঠির বিষয় জানতে পেরে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ। রাতারাতি তার নিয়ন্ত্রিত দালাল চক্রকে দিয়ে ভাড়া করা লোকদিয়ে একটি মানববন্ধন ও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি করানো হয়।

এদিকে আওয়ামী পন্থি চিকিৎসক সংগঠনের প্রতাপশালী নেতা ও জেলা কমিটির গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদে ও তার ক্লিনিকে হওয়া নানাবিধ অপকর্মের কারনে জেলাজুড়ে বহুল আলোচিত। তার বিরুদ্ধে এর আগে তুলে নিয়ে সাংবাদিক পেটানো, গ্রাম ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করে রোগীদের অঙ্গহানি, ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী হত্যা সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে। তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মব সৃষ্টি করে আমার অফিসে একটি ঘটনা ঘটিয়েছে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ শেখ ফয়সাল আহম্মেদ। তিনি আরো জানান দালাল বন্ধ করায় তার ক্লিনিক ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে বলে এই অপপ্রচার করা হয়েছে। আমি ডিসি স্যার ও উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আবাসিক কর্মকর্তা ডাক্তার শেখ ফয়সাল আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি একটু পরে কথা বলতে বলেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মানববন্ধনকারীদের আমরা বললে তারা শান্তি পূর্ণ ভাবে চলে যায়। মানববন্ধন কর্মসূচি সম্পর্কে তাদের আগে থেকে কোন তথ্য ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি আগে জানতেন না বলে জানান।

এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রিপন বিশ্বাস বলেন, সরকারি নিয়মে স্বেচ্ছাসেবক নামে কিছু নেই এগুলো দালাল। জেলা প্রশাসক স্যার তাদের কে অপসারণে চিঠি দিয়েছেন।