চুয়াডাঙ্গা ১০:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চলন্ত বিমানের চাকার ভেতর ঢুকে পড়ল শিয়াল

Padma Sangbad

অনলাইন ডেস্ক।।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় একটি বিমানের চাকার ভেতর শিয়াল ঢুকে পড়ে। তবে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। গত শুক্রবার রাত ২টার কিছু পর এ ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, রাত ২টার পর শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ফিস্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট অবতরণ করে। রানওয়ে থেকে আসার সময় ফ্লাইটটির চাকার ভেতরে হঠাৎ একটি শিয়াল ঢুকে যায়। পরে পাইলটের দক্ষতায় বিমান থামিয়ে শিয়ালটি বের করে বিমানটিকে রানওয়ে থেকে বেতে নিয়ে আসা হয়।

সূত্র আরও জানায়, ফ্লাইটটিতে আগুন ধরে যেতে পারত। দুই শতাধিক যাত্রীর জীবন সংকটের মধ্যে পড়তে পারত। কিন্তু তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।

এর আগেও রানওয়েতে শিয়ালের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এসেছে। সেই সঙ্গে ফ্লাইট উড্ডয়নের সময় বার্ড হিটিংয়ের কবলে পড়েও বহু ফ্লাইট পুনরায় অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফ্লাইট বিলম্বের কবলে পড়েন যাত্রীরা।

সূত্র জানিয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকার জঙ্গলজুড়ে শিয়ালের অবাধ বিচরণ দেখা যায়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এক কর্মকর্তা জানান, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকার জঙ্গলে প্রচুর শিয়াল দেখা যায়। এরা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলেই থাকে। তবে এরা প্রায়ই রানওয়েতে ওঠে দৌড়াদৌড়ি করে। প্লেনের শব্দ পেলে শেষ মুহূর্তে আবার সরে যায়।

পাখি ও বন্যপ্রাণী নিয়ন্ত্রণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন ওয়াইল্ড লাইফ বা বার্ড হ্যাজার্ট কন্ট্রোল কমিটি তৈরি করেছিল বেবিচক। ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল আইকাওর বিধিবিধান ও এয়ারপোর্ট সার্ভিস ম্যানুয়াল অনুযায়ী, ওয়াইল্ড লাইফ ও বার্ড স্টাইক সমস্যার মোকাবিলা করা। কোন ধরনের পাখি কোনো মৌসুমে এবং কেন আসে- এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করা, বিমানবন্দর ও এর আশপাশ এলাকার বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট নজরদারি করা, নিয়মিত বার্ড স্ট্রাইক নজরদারি করা, সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করা, বিমানবন্দরের পুকুরের মাছ চাষ, কৃষিজমি, গরু-ছাগলের খামার, ময়লা-আবর্জনার ডাম্পিং, গলফ কোর্স, ছোট পুকুর ইত্যাদি সরিয়ে ফেলা।

আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২১ সালে বেবিচক ‘ন্যাশনাল এভিয়েশন সেফটি প্ল্যান ২০২১-২০২৩’ তৈরি করে। এতে বলা হয়, বিমানবন্দরের আশপাশে পাখি এবং বন্যপ্রাণীর খাবার থাকায় এখানে তাদের আনাগোনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের জন্য এদের উপস্থিতি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। বিমানবন্দরে এদের তাড়ানোর তেমন কোনো প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেই। যেসব ব্যবস্থা আছে তাও পর্যাপ্ত নয়।

পাখি ও বন্যপ্রাণী বিমানবন্দর থেকে সরাতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে বর্তমানে সাইরেন বাজানো ও বার্ড শুটার ছাড়া তাদের তাড়াতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি বেবিচক। তবে এখনও অভিজ্ঞ বার্ড শুটারের অভাব রয়েছে।

আপডেট : ০৬:৪২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

চলন্ত বিমানের চাকার ভেতর ঢুকে পড়ল শিয়াল

আপডেট : ০৬:৪২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক।।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় একটি বিমানের চাকার ভেতর শিয়াল ঢুকে পড়ে। তবে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। গত শুক্রবার রাত ২টার কিছু পর এ ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, রাত ২টার পর শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ফিস্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট অবতরণ করে। রানওয়ে থেকে আসার সময় ফ্লাইটটির চাকার ভেতরে হঠাৎ একটি শিয়াল ঢুকে যায়। পরে পাইলটের দক্ষতায় বিমান থামিয়ে শিয়ালটি বের করে বিমানটিকে রানওয়ে থেকে বেতে নিয়ে আসা হয়।

সূত্র আরও জানায়, ফ্লাইটটিতে আগুন ধরে যেতে পারত। দুই শতাধিক যাত্রীর জীবন সংকটের মধ্যে পড়তে পারত। কিন্তু তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।

এর আগেও রানওয়েতে শিয়ালের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এসেছে। সেই সঙ্গে ফ্লাইট উড্ডয়নের সময় বার্ড হিটিংয়ের কবলে পড়েও বহু ফ্লাইট পুনরায় অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফ্লাইট বিলম্বের কবলে পড়েন যাত্রীরা।

সূত্র জানিয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকার জঙ্গলজুড়ে শিয়ালের অবাধ বিচরণ দেখা যায়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এক কর্মকর্তা জানান, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকার জঙ্গলে প্রচুর শিয়াল দেখা যায়। এরা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলেই থাকে। তবে এরা প্রায়ই রানওয়েতে ওঠে দৌড়াদৌড়ি করে। প্লেনের শব্দ পেলে শেষ মুহূর্তে আবার সরে যায়।

পাখি ও বন্যপ্রাণী নিয়ন্ত্রণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন ওয়াইল্ড লাইফ বা বার্ড হ্যাজার্ট কন্ট্রোল কমিটি তৈরি করেছিল বেবিচক। ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল আইকাওর বিধিবিধান ও এয়ারপোর্ট সার্ভিস ম্যানুয়াল অনুযায়ী, ওয়াইল্ড লাইফ ও বার্ড স্টাইক সমস্যার মোকাবিলা করা। কোন ধরনের পাখি কোনো মৌসুমে এবং কেন আসে- এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করা, বিমানবন্দর ও এর আশপাশ এলাকার বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট নজরদারি করা, নিয়মিত বার্ড স্ট্রাইক নজরদারি করা, সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করা, বিমানবন্দরের পুকুরের মাছ চাষ, কৃষিজমি, গরু-ছাগলের খামার, ময়লা-আবর্জনার ডাম্পিং, গলফ কোর্স, ছোট পুকুর ইত্যাদি সরিয়ে ফেলা।

আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২১ সালে বেবিচক ‘ন্যাশনাল এভিয়েশন সেফটি প্ল্যান ২০২১-২০২৩’ তৈরি করে। এতে বলা হয়, বিমানবন্দরের আশপাশে পাখি এবং বন্যপ্রাণীর খাবার থাকায় এখানে তাদের আনাগোনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের জন্য এদের উপস্থিতি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। বিমানবন্দরে এদের তাড়ানোর তেমন কোনো প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেই। যেসব ব্যবস্থা আছে তাও পর্যাপ্ত নয়।

পাখি ও বন্যপ্রাণী বিমানবন্দর থেকে সরাতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে বর্তমানে সাইরেন বাজানো ও বার্ড শুটার ছাড়া তাদের তাড়াতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি বেবিচক। তবে এখনও অভিজ্ঞ বার্ড শুটারের অভাব রয়েছে।