April 25, 2024, 12:16 am

ইউপি নির্বাচন : তালিকা ধরে সন্ত্রাসী-মাস্তান গ্রেপ্তারের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক।।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে চিহ্নিত মাস্তান, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়ন করে গ্রেপ্তারের জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১১ এপ্রিল দেশের ১৯ জেলার ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সামগ্রিক নিরাপত্তা বিধানে সব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়োগে দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার এবং প্রয়োজনে রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। পুলিশ সুপাররা নির্বাচনের চার দিন আগে কর্মপরিকল্পনার একটি কপি নির্বাচন কমিশনে ফ্যাক্স/ ই-মেইল/ ইন্টারনেট বা বিশেষ দূত মারফত পাঠাবেন।
সব শ্রেণির ভোটার যাতে অবাধ ও নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও স্থানীয় আস্থাভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রয়োজনে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। সব স্তরের ভোটারদের এবং বিশেষ করে নারী ভোটারদের নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যকলাপ সম্পর্কে যেন সব শ্রেণির ভোটার (বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোটার ও নারী ভোটার) পূর্ব হতে নিশ্চিত হতে পারেন তা উপযুক্ত প্রচারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার পরিচালনা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়ন পূর্বক গ্রেপ্তার করতে হবে চাঁদাবাজ, মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের।
এছাড়াও নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন, উস্কানিমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ, অর্থ, পেশীশক্তি ব্যবহার রোধের প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে একই নির্দেশনায় ডিসি-এসপিদের পাশপাশি সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা সমুজ্জল ও সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। এক্ষেত্রে কোনো রকম পক্ষপাতিত্ব, পছন্দ, অপছন্দকে সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে। কথায়, কাজে, আচরণে দৃশ্যমান স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে। সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্দেশনার অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠিয়েছে ইসি।
তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৪ মার্চ (বুধবার), প্রতীক বরাদ্দ ২৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার)।
প্রথম ধাপের ইউপি ভোটে মনোনয়ন বাছাইয়ের পর চেয়ারম্যান পদে একজন করে বৈধ প্রার্থী রয়েছে এমন ইউপির সংখ্যা ৩১টি। অর্থাৎ ৩১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন। এদের কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে, তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
চেয়ারম্যান পদে সর্বমোট মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১ হাজার ৭৫০ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে ১৯ মার্চ বাছাইয়ে বাতিল হয়েছেন ৭০ জন। অর্থাৎ বৈধ প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৬৮০ জন।
প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ১ হাজার ৪৪ জন। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৩৫৪ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২১৭ জন, জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) ৩১ জন, জাতীয় পার্টির (বাইসাইকেল) ৬ জন, জাতীয় সামজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ৩ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১ জন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ১ জন, জাকের পার্টির ১৩ জন ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের ১ জন প্রার্থী নির্বাচনে বৈধতা পেয়েছেন।
ছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৪ হাজার ৩০৮ জন, বাছাইয়ে বাতিল হয়েছেন ৫৮ জন। বৈধতা পেয়েছেন ৪ হাজার ২৫০ জন। আর সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৪ হাজার ৪৩১ জন প্রার্থী। বাছাইয়ে বাতিল হয়েছেন ২২৫ জন। আর বৈধতা পেয়েছেন ১৪ হাজার ২০৬ জন প্রার্থী।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :