গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, গত ২৯ ও ৩০ এপ্রিল ঢাকায় ১৪৬ মি.মি., সিতাকুণ্ডে ১১২ মি.মি., টাঙ্গাইলে ১০৭ মি.মি., ময়মনসিংহে ১৭১ মি.মি., রাঙ্গামাটিতে ১১০ মি.মি. ও সন্দীপে ৯৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ প্রবণতা স্বাভাবিক নয়। সরকার বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাব্য পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বর্ষার সময়ে সকলকে পরিস্থিতি দেখেশুনে ঘর থেকে বের হওয়ার আহবান জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন ১০৯০ নম্বরে কল করে আবহাওয়া পরিস্থিতি জেনে সকলকে ঘর থেকে বের হতে অনুরোধ জানাই। সরকার এ মোবাইল কল বিনামূল্য করে দিয়েছে।
গত দুই মাসে বজ্রপাতে ৭০ জন মানুষ মারা গেছে। এরমধ্যে মার্চে ১২ জন ও এপ্রিলে ৫৮ জন। শুধু ২৯ ও ৩০ এপ্রিল দুই দিনেই মারা গেছে ২৯ জন মানুষ।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর পাহাড় ধসে পার্বত্য এলাকায় ১৬৬ জন লোকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এ বছর পাহাড় ধস মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ ঢালে বসবাসকারীদের দ্রুত সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে। অধিক বৃষ্টিপ্রবণ জেলাগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কারণ সেখানে পাহাড়ি ঢল বা আগাম বন্যা হতে পারে। তিনি বলেন, পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে প্রত্যেক জেলায় ত্রাণ সামগ্রী যেমন: জিআর চাল, নগদ অর্থ, ঢেউটিন, ঘর নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যাতে কোনো দুর্যোগ হলে ডিসিকে ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকতে না হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১০ লক্ষ তালবীজ রোপণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আশার কথা হলো এখন পর্যন্ত প্রায় ৩১ লক্ষ ৬৪ হাজার তালের বীজ রোপণ করা হয়েছে। মোবাইল টাওয়ারগুলোতে আর্থিং এর ব্যবস্থা সংযুক্ত করে বজ্র নিরোধক দণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া বজ্রপাত মোকাবিলায় দালান কোঠায় বজ্র নিরোধক দণ্ডলাগানো বাধ্যতামূলক করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।