এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি

টানা তিন মাস ধরে দেশে বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার। বিদায়ি অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৫৬ শতাংশে। গত এক যুগের মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ। শুধু খাদ্য মূল্যস্ফীতিই নয়, বেড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও।

অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির গড় ৯.৯৩ শতাংশ, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সোমবার(৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) অক্টোবর মাসের মূল্যস্ফীতি বা ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) তথ্য প্রকাশ করেছে। বিবিএসের তথ্য থেকে মূল্যস্ফীতির এই তথ্য জানা গেছে। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে ।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯.৭২ শতাংশ। আর গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৯৯ শতাংশ। শহর এবং গ্রামে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও। অক্টোবর মাসে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.৫৮ শতাংশ, আর গ্রামে ১২.৫৩ শতাংশ ছিল।

মূল্যস্ফীতির এই উল্লম্ফনের পেছনে আলু এবং ডিমের মূল্যবৃদ্ধি মূল কারণ বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, হ্যাঁ মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ ডিম আর আলুর মূল্যবৃদ্ধি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আলু আমদানি হচ্ছে।

এখন অগ্রায়ণ মাস। মাঠে অনেক ফসল রয়েছে। তাই আশা করছি সামনের দিনে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। সরকারও মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’ তবে মন্ত্রী এটা বলেছেন, হরতাল-অবরোধের কারণে পণ্য পরিবহন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে; যা ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি বাড়াতেও পারে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১.০২ শতাংশ। ২০২২ সালের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৯১ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ০.৩ শতাংশ। গত আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৬৩ শতাংশ।

গত এক যুগের মধ্যে অক্টোবরে সর্বোচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে বিবিএসের তথ্য বলছে। এই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২.৫৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে ছিল ১২.৩৭ শতাংশ ও আগস্টে ছিল ১২.৫৪ শতাংশ। অথচ গত বছরের অক্টোবরে এই হার ছিল ৮.৫০ শতাংশ। বছর ঘুরতেই বেড়েছে ৪.০৬ শতাংশ।

আগে ৪২২টি পণ্যের ভোক্তা মূল্য হিসাব করা হলেও এখন করা হয় ৭৫৯ পণ্যের ওপর। নতুনভাবে যুক্ত হওয়া খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম মদ, সিগারেট, বেভারেজ এবং মাদকদ্রব্য, সন্তানের শিক্ষার খরচ, পরিবারের ইন্টারনেট খরচ, হোটেলে খাবারের খরচসহ আরো বেশ কয়েকটি খাত।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *