May 2, 2024, 8:32 pm

কুমিল্লাকে মাটিতে নামিয়ে বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

আজকের আগে বিপিএলে চারবার ফাইনালে উঠেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চারবারই। ২০১৫ ও ২০১৮ সালের শিরোপাজয়ী এই দলটি সর্বশেষ দুই আসরেও দেখেছে শিরোপার মুখ। উড়তে থাকা এই দলটিকেই মাটিতে নামিয়ে আনল তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশাল। ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতল বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি।

শুধু বরিশালই নয়, প্রথমবারের মতো শিরোপার মুখ দেখেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে কিছু প্রতিষ্ঠিত নামও। এর মধ্যে আছেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

এদিন কুমিল্লার দেওয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্য ৬ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় বরিশাল। ১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বরিশালের বিপক্ষে শুরুতেই খেই হারায় কুমিল্লা। তানভীর ইসলামের করা প্রথম ওভারেই আসে ১২ রান। এর মধ্যে অতিরিক্ত রান হিসেবেই আসে ১১ রান। দ্বিতীয় ওভারে আসা তরুণ পেসার রোহানাত দৌলার ওপর চড়াও হন তামিম-মিরাজ। এই ওভার থেকে আসে ১৫ রান। তৃতীয় ওভারে তামিমের কাছে ২ ছক্কা হজম করে ১৪ রান দেন তানভীর। শুরুর ৩ ওভারে ৪১ রান হজম করে ম্যাচ থেকেই যেন ছিটকে যায় কুমিল্লা।

দলের রান ৭৬ পর্যন্ত নিয়ে যায় তামিম-মিরাজের ওপেনিং জুটি। অষ্টম ওভারের শেষ বলে মঈন আলীর বলে তামিম ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ২৬ বলে সমান ৩টি চার ও ছক্কায় ৩৯ রান করে ফেরেন বরিশাল অধিনায়ক। দলের সঙ্গে আর ৬ রান যোগ হতে ফেরেন মিরাজও। তামিমের সমান বল খেলে ২৯ রান করেন তিনি।

এই দুজন আউট হলেও বরিশালকে একটুও চাপে ফেলতে পারেননি কুমিল্লার বোলাররা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে বরিশালকে জয়ের বন্দরে নিতে থাকেন কাইল মেয়ার্স ও মুশফিকুর রহিম। এর মধ্যে ব্যাট হাতে মুশফিক ধীরলয়ে খেললেও আগ্রাসী ছিলেন টুর্নামেন্টজুড়ে বলে-ব্যাটে অন্যন্য পারফরম্যান্স করা মেয়ার্স। জয়ের নোঙর ফেলার একটু আগেই ফেরেন মেয়ার্স। ৩০ বলে অর্ধশতক থেকে ৪ রান দূরে থাকতে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন তিনি। জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতে ফেরেন মুশফিকও। শেষের দিকে জয়ের জন্য বাকি পথটুকু নির্বিঘ্নেই পাড়ি দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ডেভিড মিলার।

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ১৫৪ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে কুমিল্লা। এদিন, প্রথম ওভারেই সুনীল নারাইনকে ফেরান কাইল মেয়ার্স। একবার ওবেড ম্যাককয় তার সহজ ক্যাচ ছাড়লেও দ্বিতীয়বার একই ভুল করেননি। এরপর ঝোড়ো সূচনার ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। দলীয় ৩০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৫ রান করে ফেরেন তিনিও। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারের মধ্যে অধিনায়ক লিটনও ফেরেন। শেষের ২ উইকেট নেন জেমস ফুলার।

বরিশালের বোলার-ফিল্ডারদের নিপুণ দক্ষতায় ৭৯ রানের মধ্যে জনসন চার্লস ও মঈন আলীও প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে বাধ্য হন। তবে একপাশ আগলে ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অংকন। কুমিল্লা দলীয় ১০০ রান পূর্ণ করে ১৫ ওভার ১ বলে। সপ্তম উইকেটে জাকের আলীকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়েন। তবে সেটি ছিল বেশ ধীরগতির। ১১৫ রানের মাথায় ৩৫ বলে ৩৮ রান করে সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হন অংকন।

অষ্টম ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন আন্দ্রে রাসেল, তখন ইনিংসের বাকি মাত্র ২০ বল। তবে বরাবরের মতোই হতাশ করেননি রাসেল। শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে খেলে গেছেন দাপট দেখিয়ে। আরেক পাশে জাকের ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক করতে না পারলেও রাসেল ছক্কা মেরেছেন ৪টি। শেষ পর্যন্ত ১৪ বলে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের লড়াকু পুঁজি পায় কুমিল্লা।

বরিশালের হয়ে বল হাতে দারুণ ইকোনমি বজায় রেখেছেন কাইল মেয়ার্স, তাইজুল ইসলাম ও ওবেড ম্যাককয়। সমান ৪ ওভারে তারা রান দিয়েছেন যথাক্রমে ২৬, ২০ ও ২৪। এর মধ্যে মেয়ার্স ও ম্যাককয় একটি করে উইকেটও নিয়েছেন। এছাড়া ফুলার ২টি ও সাইফউদ্দিন ১টি উইকেট পেলেও ছিলেন বেশ খরুচে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :