যশোর শহরের রাঙামাটি গ্যারেজ এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা আবিষ্কার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ওই এলাকার নিউ বিসমিল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে বিছালি কাটার মেশিন তৈরির অন্তরালে চলছিল অস্ত্র তৈরি কার্যক্রম। গতকাল রাতে ওই কারখানা থেকে পাঁচটি পিস্তল, গুলি ও অস্ত্র তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবির একটি চৌকস দল। এ সময় কারখানা মালিক ও কর্মচারীসহ তিনজনকে আটক করে। রাত ১১ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। ওই কারখানার পেছনে আর কারা রয়েছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে মাঠে নেমেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক টিম।
জেলা গোয়েন্দা শাখা সূত্র জানিয়েছে,ওইদিন রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ আসে, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুত আছে রাঙামাটি গ্যারেজ এলাকায়। এছাড়া, সেখানে অস্ত্র তৈরি হচ্ছে বলে তথ্য ছিল। খবর পেয়ে ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে একটি চৌকস টিম। ডিবি হাতেনাতে আটক করে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে নিউ বিসমিল্লাহ ইঞ্জিয়ারিংয়ের মালিক আব্দুল কুদ্দুস, একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন ও শহরের বেজপাড়া এলাকার এলাহী বক্সের ছেলে আজিজুল ইসলাম। ওইসময় উদ্ধার করা হয় দেশি তৈরি পাঁচটি পিস্তল ও তিনটি গাছি দা।
ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, আব্দুল কুদ্দুস দীর্ঘদিন রাঙামাটি গ্যারেজ এলাকার একটি দোকান ভাড়া নিয়ে লেদ তৈরি করে প্রথমে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি শুরু করতো। এরপর গোপনে শুরু করে ভয়ানক ব্যবসা। অর্থবৈভবের আশায় তিনি শুরু করেন অস্ত্র তৈরি ও বিকিকিনির কারবার। একপর্যায়ে গোপনে তারা অন্য যন্ত্রপাতির আড়ালে পিস্তলসহ বিভিন্ন ভার্সনের অস্ত্র তৈরি করা শুরু করে। যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সে সরবরাহ করে থাকে। খবর পেয়ে হাতেনাতে তাদেরকে আটক করা হয়।
ওইসময় অস্ত্রের কারখানার মালিক আব্দুল কুদ্দুস, কর্মচারী আজিজুল ইসলাম ও সুমনকে আটক করা হয়। আটকদের জিজ্ঞসাবাদ চলছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
এদিকে,কারখানা আবিষ্কার ও অস্ত্র গুলি উদ্ধারের সংবাদে শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলাল হুসাইন। ওইসময় তিনি জানান, রাতে (বৃহস্পতিবার) তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওই কারখানার নেপথ্যে আরও কেউ থাকলে খুঁজে বের করা হবে। যশোর তথা দেশের বিভিন স্পট উত্তপ্ত করতে এই অস্ত্র কাজে লাগানোর প্রচেষ্টায় যারা আছে সবাইকে খুঁজে বের করা হবে। ওই কারখানার অস্ত্র কোথায় কোথায় বিক্রি করা হয়েছে সেই তথ্য আদায়ের চেষ্টা করা হবে। এ ব্যাপারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply