July 27, 2024, 12:39 pm

এবার ডিমের দাম কমে যাওয়ায় হৈচৈ

এবার ডিমের দাম কমে যাওয়া নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যে ডিম সাড়ে ১২ টাকার নীচে নামছিল না, সেই ডিমে রাতারাতি এক টাকা করে কমলো কীভাবে। যে ডিম সাড়ে ১১ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহ করা হচ্ছিল সেই একই ডিম খুচরা বিক্রেতারা পাচ্ছেন সাড়ে ১০ টাকায়।
ভারত থেকে ডিমের প্রথম চালান আসার পরপরই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে যশোরের বাজারে। ক্রেতাসহ যশোরের বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিকরা বলছেন, মাত্র ৬২ হাজার ডিম আমদানির পরপরই দাম কমে গেছে। তাহলে কোটি কোটি ডিম যখন আসবে তখন কী হবে। তারা ডিম আমদানি অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে লাগাতারভাবে ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখি। অবস্থা এমন পর্যায়ে যায় যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি পিস ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকা বেধে দেয়। যদিও ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকা বেধে দেয়ার পর দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ভোক্তারা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। তারা দাম আরও কমানোর দাবি জানান। ওইসময় ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু আমদানির অনুমতিপ্রাপ্তরা দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে ডিম আনেনি। এই সময়ের মধ্যে ডিমের দাম কমেনি।
এ অবস্থায় রোববার প্রথম দফায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আনা হয়েছে বাংলাদেশে। এই চালানে এসেছে মাত্র ৬২ হাজার। এই খবর শুনে যশোরের বাজারে ডিমের দাম কমেছে প্রতি পিসে এক টাকা। যশোরের বিভিন্ন দোকানীদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, আমদানির খবরে প্রতি পিস ডিমে কমে ৫০ পয়সা। আর ডিম বেনাপোলে এসেছে এই খবরে কমেছে আরও ৫০ পয়সা।
ক্রেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, মাসের পর মাস যে ডিম সাড়ে ১২ টাকার নীচে নামছিল না, সেই ডিম এখন কীভাবে এক টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে? তাহলে লোকসান দিয়ে বাজার ধরে রাখার চেষ্টা? নাকি এতদিন মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করেছে কোম্পানি?
যশোর শহরের চারখাম্বা এলাকার সুলতান আহমেদ বলেন, ‘মাসের পর মাস ডিমের দাম কেউই কমাতে পারলো না। যেই আমদানি শুরু হয়েছে সেই কমে গেলো। এটি কারসাজি ছাড়া কিছুই না।’
বেজপাড়া এলাকার নাজমুন নাহার টপি বলেন, ‘প্রতিটি পরিবারে ডিম অপরিহার্য এক পণ্য। ডিম থাকলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানো যায়। নিম্নবিত্ত পরিবারে একসময় ডিমই ছিল ভরসা। কিন্তু দাম বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেছে যে, নিম্নবিত্ত মানুষ এখন আর নিয়মিত ডিম খেতে পারে না। কিন্তু এটি নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।’
নজরুল ইসলাম নামে একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘পোল্ট্রি শিল্প এখন পুঁজিপতিদের হাতে। তারা যেভাবে চালায় সেভাবেই চলে। শিল্পপতিদের কারণে যশোরে অসংখ্য ছোট খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এখন হাতেগোনা দু’ তিনটি কোম্পানির ডিম এবং বাচ্চা মার্কেটে রয়েছে। বড় বড় কোম্পানির কৌশল কখনো কখনো দাম কমিয়ে দিয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গলাকাটে ক্রেতাদের।’
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক তামান্না তাসনিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে ১২ টাকায় ডিম হচ্ছে। ভারতীয় ডিম আসায় দাম আরও কমেছে। এভাবে ডিম আসা অব্যাহত থাকলে সামনে দাম আরও কমবে। সোমবার সারাদিন যশোরে মূল আলোচনা ছিল ডিমের দাম কমে যাওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :