রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে বাহাত্তর বছর আগের একটি আইন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এ আইনের আওতায় ওয়ারেশ সূত্রে পাওয়া জমি বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্যই দাতা ও গ্রহীতাকে নোটিশ পাঠাতে হবে। সাব রেজিস্ট্রারদের বাড়তি ঝামেলা এড়াতে ও মামলার জট কমানোর জন্য এ আইনের প্রয়োগ শুরু করেছে রেজিস্ট্রি অফিসগুলো।
সূত্র জানায়, মূলত ঢাকা নিবন্ধন অধিদপ্তর জমি বিক্রির ক্ষেত্রে দাতা-গ্রহীতার প্রতি নোটিশ জারির নির্দেশ দিয়েছে। গত ১১ মে বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তর ২৩৯ (৫০১) ৬৮ নং স্মারকের নির্দেশ মোতাবেক রাষ্ট্রিয় অধিগ্রহণ শাখা আইনানুযায়ী এ নিদের্শনা জারি করা হয়েছে। ১৯৫০ (১৯৫১ সনের ২৮ নং আইন) এর ধারা ৮৯ উপধারা ৪ ও ৫ এর বিধানবলী প্রতি পালনের লক্ষ্যে জমির ওয়ারেশ, শরিক ও শরিকগনের নিকট জমি রেজিস্ট্রির আগে নোটিশ প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়। অধিদপ্তরের এ আদেশ দেশের সকল জেলা ও সাব রেজিস্টারের অফিসে পাঠানো হয়েছে। এ নোটিশ প্রদানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দলিল লেখকদের। বর্তমানে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এ নিয়ম চালু হয়েছে। বাকি উপজেলাগুলোতে এখনও কার্যকর হয়নি।
রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাহাত্তর বছর আগে ১৯৫০ সালে প্রণীত আইনটি চল্লিশ বছর যাবৎ ওয়ারেশ সূত্রে পাওয়া জমি বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। কিন্ত ১৯৯০ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে আইনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে আদালতে মামলার পাহাড় জমতে থাকে। আর এসব ক্ষেত্রে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এসব দিক বিবেচনা করে নিবন্ধন অধিদপ্তর এ আইনটি বাধ্যতামূলক করে আদেশ জারি করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী একাধিক ভুক্তভোগী জানান, এই আদেশের ফলে ও আদেশ বাস্তবায়ন হলে আদালতে মামলার জট অনেকাংশে কমে যাবে ও ভুক্তভোগী মানুষ হয়রানির শিকার থেকে রক্ষা পাবে।
সূত্র জানায়, এ আইনের আওতায় আদেশটি শুধুমাত্র ওয়ারেশ সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, একটি পরিবারে ৫ বা ৬ জন বা তার অধিক ওয়ারেশ থাকলে তার মধ্যে কোন সদস্য যদি অন্য ওয়ারেশদের না জানিয়ে তার ভাগের অংশ বিক্রি করেন সে ক্ষেত্রে দেখা যায়, অন্যান্য শরিকদের মধ্যে কেউ পি এম শোন মামলা করেন আদালতে। যাকে বলা বলা হয় হক সেবা মামলা। এভাবে বছরে দেশের বিভিন্ন আদালতে গড়ে ওঠে পাহাড় সমান হক সেবা মামলা। যার কারণে আদালতে মামলার জট লেগেই থাকে। আর এ কারনে বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তর সম্প্রতি হাইকোর্টের এক আদেশের বলে এ আদেশ জারি করেন।
এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্টারের ব্যবহৃত মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যশোর জেলায় এ নিয়মটি এখনো পূর্ণাংঙ্গভাবে চালু হয়নি। তবে এ আদেশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
Leave a Reply