মোঃ শহিদুল ইসলাম, কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা ।।
হাতের পাঞ্জা সহ দশ টি আঙুল না থাকালেও দুই হাতের গুড়ালি দিয়ে লেখে আরাফাত মল্লিক(১১) তারপরও ক্লাসে সব সময় প্রথম হয়েছে সে। লেখা-পড়া করে জীবনে সরকারি বড় কর্মকর্তা হবার ইচ্ছে তাঁর। আরাফাত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর গ্রামের নন্দী পাড়ার আলামিন মল্লিকের ছেলে।
আরাফাত মল্লিকের পিতা আলামিন মল্লিক বলেন,জন্ম থেকেই আরাফাত শারিরীক প্রতিবন্ধী। ওই অবস্থায় দেখার পর প্রথমে কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। তবে ভেঙ্গে পড়িনি। বিশেষ করে তাঁর মা ছিলেন আরো শক্ত অবস্থায়। আর সব সন্তানের তুলনায় আরাফাতকে একটু আলাদা ভাবেই বড় করতে হয়েছে আমাদের।
তিনি বলেন, আরাফাত বড় হয়ে স্কুলে যাওয়ার মত হলে,তাকে বলুহর দক্ষিণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সময় শুধু রোল হয় একটু বেশি।
এরপর থেকে সে কোন দিন ২ নাম্বার হয়নি ক্লাসে। এরজন্য অকান্ত পরিশ্রম করেছেন তাঁর মা সেলিনা খাতুন। আজ তাঁর বয়স ১১ বছর। বর্তমানে সে কোটচাঁদপুর সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্র। সে ৫ম শ্রেনীতে বৃত্তি পরিক্ষাও অংশগ্রহণ করেছেন। আরাফাত বৃত্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন আমাকে।
তিনি আরো বলেন,কাজের ফাঁকে একদিন আরাফাত আমাকে জিজ্ঞাসা করেন,বাবা সরকারি বড় পদ কি।আমি ওই সময় তাকে বলেছিলাম,জেলা প্রশাসক,এসপি,ইউএনও। ওই সময় সে আশা প্রকাশ করে ছিল সরকারি বড় কর্মকর্তা হওয়ার। আলামিন মল্লিকের দুইটি সন্তান। এরমধ্যে আরাফাত মল্লিক বড় আর ছোট মেয়ের বয়স ৯ মাস।
জানা যায়,আলামিন মল্লিক বিএ পাস আর তার মা সেলিনা খাতুন এসএসসি পাস। তারা শিক্ষিত হয়ে ও কোন চাকুরী না করে,পিতা আলামিন মাঠে কৃষি কাজ বেঁচে নিয়েছেন। আর মা সেলিনা খাতুন গহিনী। তারা ছেলে মেয়েদের মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলে নিজেদের ইচ্ছে পূরন করতে চান।
আরাফাত মল্লিক বলেন,ছোট বেলা থেকে দুই হাতে লিখে অভ্যাস হয়ে গেছে। তেমন কোন সমস্যা হয় না।সবার মত লিখতেও পারি। বড় হয়ে কি হতে চাও এমন প্রশ্নে,সে বলেন,লেখা পড়া শিখে সরকারি দপ্তরের বড় কর্মকর্তা হতে চাই।
Leave a Reply