May 18, 2024, 9:10 pm

কোটচাঁদপুরে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টা চাষ

মোঃ শহিদুল ইসলাম, কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা।।

স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় অল্প পুঁজিতে ভুট্টা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ভুট্টা চাষীরা। ভুট্টার ক্ষেতে লকলকে সবুজ পাতার ফাঁকে আসতে শুরু করেছে ফুল ও ভুট্টার মোচা। এই দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।

ভুট্টা মানুষের জন্য পুষ্টিকর তেমনি পোল্ট্রি ও মাছের খাবারসহ বিভিন্ন খাবারে যুক্ত হওয়ায় ব্যাপকহারে চাহিদা বেড়েছে।

শুধু ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল কৃষি জমিতে ভুট্টা চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। আবার ভুট্টা আবাদের সাথে সাথী ফসল চাষেও বাড়তি অর্থ পাচ্ছেন চাষীরা।

উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা যায় , ভুট্টার চাষে অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা রয়েছে। এই মৌসুমে ৩ হাজার ৪ শত ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্য মাত্র থাকলেও চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে এন এইচ ৭৭২০, সুপার স্টার ৯২৫৫,কাবেরি ৩৩৫৫, ডন ৫৫৩৩ সহ বিভিন্ন জাতের ভুট্টা।

উপজেলা প্রতান্ত অঞ্চলে বেশ কয়েক জন কৃষক জানান প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সেচ, সার ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪০ থেকে ৪৫ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এতে অল্প পুঁজিতে প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা ও পৌর এলাকাসহ প্রায় সব জায়গায় কৃষকের বিস্তির্ণ ফসলের মাঠ এখন ভুট্টার সবুজ ক্ষেতে ভরে গেছে। পৌর এলাকার বাজেবামদাহ মাঠ ও মুরুটিয়া গ্রামে দেখা যায় গাছগুলো বেশ বড়ও হয়ে ওঠেছে। মোচা ধরাও শুরু হয়েছে। এখন ভুট্টা ক্ষেতগুলোর পরিচর্যা ও নিড়ানী এবং সেচ সহ নানা কাজে ব্যস্ত চাষীরা। অনেক এলাকায় গাছগুলো হাঁটু সমান আর কিছু এলাকায় আগাম ভুট্টা রোপণ করায় গাছ মানুষের উচ্চতাকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও গাছে মোচা এসেছে। এসব ফলন আগাম ঘরে তোলা যাবে।

উপজেলার মুরুটিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম, দামও বেশি থাকে বলেই ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন কৃষক।

পৌর এলাকার ভুট্টা চাষি হজরত আলী বলেন, ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম। দামও ভালো পাওয়া যায়। গত বার কাঁচা ভুট্টা বেচেছি ১১০০ টাকা মন। একটু দেরীতে বিক্রি করলে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা পাওয়া যায়। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে দেড় লক্ষাধিক টাকার ভুট্টা বিক্রি করবেন বলে জানান।

উপজেলা কৃষি অফিসার মহাসীন আলী বলেন, এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। ভূট্টা একটি লাভজনক ফসল। তাছাড়াও কম সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা ভূট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে ভূট্টার ক্ষতিকর বালাই “ফল আর্মি ওয়ার্ম” সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন থাকতে হবে এবং ভূট্টার পোল্ট্রি ফিড ব্যতীত এর বহুমুখী ব্যবহারে এগিয়ে আসতে হবে তাহলেই এই ফসলটির স্থায়িত্ব এবং চাষাবাদ আরো অনেকাংশে বেড়ে যাবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :