May 2, 2024, 12:15 am

টাঙ্গাইলে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ : ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি

ইফতেখারুল অনুপম,(বাসস) : টানা এক সপ্তাহের শীতে জেলার শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়েছে পড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। এর মধ্যে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়ায়। আক্রান্তরা কেউ-কেউ বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকেই জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এছাড়াও অনেকেই জ্বর ও নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছে। এতে বাড়তি রোগির চাপে সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ১২ আসনের বিপরীতে দুপুর পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৯৩ জন। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এক আসনে গাদাগাদি করে দুইজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নাগরপুর উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রুমি খাতুন বলেন, আমার দেড় বছরের নাতী তিনদিন যাবত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে সিট না পেয়ে বারান্দার মেঝেতে অবস্থান করছি।
সদর উপজেলার করটিয়া থেকে আসা মেঘনা আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে দুইদিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওয়ার্ডে পা ফেলার মতো কোন জায়গা নাই। সকল ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সরকারি খরচে হাসপাতাল থেকে করতে পারলে আমাদের মতো সাধারণ রোগিদের অনেক উপকার হতো। অপর একজন রফিক মিয়া বলেন, আমার তিন বছরের ছেলে সাতদিন যাবত ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত। পাঁচদিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও সবসময় পাঁচ শতাধিক রোগি ভর্তি থাকে। গত ১৬ দিনে ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ৬৭৮ জন রোগি ভর্তি হয়েছে। অনেক ওষুধ আমাদের সাপ্লাই নাই। সেগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। তিনি বলেন, হাসপাতাল প্রতিনিয়ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। ডায়রিয়ার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বার-বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। এছাড়াও মুখে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে শিশুর সংখ্যা বেশি থাকে। ঠান্ডায় শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি, জ্বর ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমনের মতো শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগি বেশি দেখা দিচ্ছে। ডায়রিয়া হলে শিশুদের ওরস্যালাইন খাওয়াতে হবে। আর পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসী খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। শিশুকে গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। শিশুদের বুকের দুধ ছাড়াও মৌসুমী সবজী ও ফল খাওয়াতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :