May 2, 2024, 12:10 am

তীব্র গরমে বাড়ছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ, শিশুরা আক্রান্ত বেশি

চলতি এপ্রিলের শুরু থেকে সারাদেশে তীব্র গরমে ভয়াবহ সংকটে পড়েছে জনজীবন। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে হিট স্ট্রোকসহ জ¦র, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগী। সব বয়সের মানুষ ভুগলেও এই গরম সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে শিশুদের। বৃহস্পতিবার যশোর সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে দু’শতাধিক শিশু। যা এ বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড। আর ওয়ার্ডে ২০ বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৩৭ রোগী।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। প্রতিদিন এ বিভাগ থেকে শতাধিক রোগী সেবা নেয় বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকারা। কিন্তু তীব্র গরমে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই অবস্থা শিশু ওয়ার্ডেও। প্রতি ঘণ্টায় এখানে রোগীর চাপ বাড়ছে। বর্তমানে এ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে ৩৭ রোগী।
চার বছর বয়সী শিশু শুভর হাতে ক্যানোলা লাগানো। তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। মা রোকেয়া বেগম জানান, ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ছেলের জ্বর হয়। এক পর্যায়ে তার খিঁচুনি শুরু হয়। ভয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তির পরামর্শ দেন।
কথা হয় আরেক রোগীর স্বজন মনোয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে গরমের মাত্রাটা বেড়ে গেছে। তার ভাগ্নি উর্মি আইসক্রিম ও ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বেশি খায়। দিনে একাধিকবার গোসল করে। এরপর তার গলাব্যাথা ও জ্বর আসে। ফার্মেসি থেকে শুরুতে ওষুধ কিনে তাকে খাওয়ান। কিন্তু, তাতে কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানান, তাপপ্রবাহ আসলেই শিশুদের অসুখে আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। ফলে রোগীর চাপ বেড়ে যায় হাসপাতালে। এই সময়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। শিশুদের অপ্রয়োজনে বাসার বাইরে যাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার করতে হবে। রাস্তার পাশের হোটেল থেকে খাবার ও পানীয় পরিহার করতে হবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ জানান, প্রতিবছর এই সময়ে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এখন রোগীর যে চাপ আছে, তা আগামী কয়দিনে আরও বাড়তে পারে। রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। হাসপাতালে স্যালাইন ও ওষুধের কোনো সংকট নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, যশোরে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। বৃহস্পতিবার যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবারও ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। থার্মোমিটারের পারদ ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে আবহাওয়াবিদরা তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর আগামী দু’একদিনের মধ্যে তাপ প্রবাহের পরিবর্তনের তেমন কোনো সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :