জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। ঘরের জানালায় পর্দা দিয়ে গরম হাওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমে নিস্তার নেই চুয়াডাঙ্গাবাসীর।
কর্মহীন মানুষের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, একদিনের ব্যবধানে আবারো চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রবিবার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২৯ শতাশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১৮ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২০ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৬৮ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গায় টানা ছয়দিন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। রবিবার (২১ এপ্রিল) সর্বোচ্চ রেকর্ড করা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ২৯ শতাংশ ,শনিবার (২০ এপ্রিল) তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৩৪ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১৭ শতাংশ। সকাল ৯টা তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৪৫ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১৯ শতাংশ। বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের ফলে সবজি ক্ষেত পানি দিয়েও রক্ষা করতে পারছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
চলমান তাপদাহে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করার পরামর্শ দেন।
এদিকে গরমজনিত কারনে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে যেসব অসুস্থতা দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডায়রিয়া,পেটের পীড়া, ঠাণ্ড, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানি শূন্যতা ও হিট স্ট্রোক।
হাসাপাতাল সূত্রে জানা যায়, রবিবার পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতালে ৩৭৬ জন রোগী ভর্তি আছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: উম্মে ফারহানা বলেন ,আমাদের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসাপাতাল হলেও জনবল আছে ৫০ শয্যার। এখানে সাধারনত ৩০০ এর মতো রোগী সব সময় থাকে, তবে অতিরিক্ত গরমের কারনে কয়েক দিনের ব্যবধানে রোগী বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের হাসপাতালে যে পরিমান জনবল আছে, সেটা দিয়েই রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের জনবল যদি আরো বাড়ানো যেতো তাহলে সুবিধা হতো।
তিনি আরো জানান, আমাদের স্যালাইন ও ওষুধের যে পরিমান সাপ্লাই আছে তাতে এখনো সমস্যা হয়নি।।
Leave a Reply