অনলাইন ডেস্ক।
অভিযান, জরিমানা কোন কিছুতেই আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দর নির্ধারণের এক সপ্তাহ পার হলেও ইচ্ছামতো দামে আলু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি মজুতদাররা হিমাগার থেকে বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
এদিকে বাজার স্বাভাবিক করতে, মুন্সীগঞ্জে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ৩৭ টাকা দরে ট্রাকের মাধ্যমে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলুর দাম প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে দুই দফায় ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে তাদের কিনতে হচ্ছে। অথচ জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদেরকেই।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামে তারাও কিনতে পারছেন না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, বড় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে, জনগণের স্বার্থে তারা অভিযান চালিয়ে যাবে।
আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। এখনও সেখানকার ১৯টি হিমাগারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। তারপরও সরকারের দাম না মেনে হিমাগারগুলোতেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকায়। অথচ এই দাম হবার কথা ছিলো খুচরা বাজারে।
এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কিনে ব্যাপারীরা হিমাগারে রাখছে। এখন বেশি দামে বিক্রি করছে। সিন্ডিকেট যতদিন ভাঙা না যাবে ততদিন আলু কেন কোনো বাজারই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
ভোক্তা অধিকার আলুর বাজার এবং হিমাগারে নিয়মিত অভিযান চালালেও কোনো ফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা।
একইভাবে অভিযান, জরিমানার পরও মানিকগঞ্জে খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একই সাথে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরাতো বেশি দামে কিনি। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের জরিমানা করে। আলুতো আমরা নির্ধারিত দামে আনতে পারছি না। আজকেও ৪৪ টাকায় পাইকারি কেনা আমাদের। তাহলে ৫০ টাকাতেই আমাদের বিক্রি করতে হবে।
কুমিল্লাতেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এক কেজি আলু।
কুমিল্লার এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তাতে আমি বিক্রি করতে পারছি না। কেনা পড়ছে বেশি দামে। কমে কীভাবে বিক্রি করবো।
মুন্সীগঞ্জে নানা অজুহাতে হিমাগারগুলো থেকে আলু বের করছেন না ব্যবসায়ীরা।সেখানে আলুর দাম ৩৭ টাকা রাখতে ট্রাকের মাধ্যমে আলু বিক্রি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
বাজার স্থিতিশীল না হলে কঠোর অবস্থান নেবে সরকার। প্রয়োজনে আলু আমদানি করা হবে। নীলফামারীতে বিভিন্ন হিমাগারে অভিযানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভোক্তা অধিকারের সংরক্ষণ অধিপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘যার বেশি টাকা আছে সে এখানে বিনিয়োগ করে পুরো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলছে। আমরা সেই জায়গাটা ভাঙতে চাচ্ছি। যে দেশ আলু রপ্তানি করে। এখন আমাদের নাম লেখা হবে আলু আমদানিকারক দেশ। জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে হয়তো আমাদের এই কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে পারে।’
রংপুরেও সরকারের বেঁধে দেয়া দামে হিমাগার ও খুচরা কোথাও আলু বিক্রি হচ্ছে না।
Leave a Reply