May 19, 2024, 5:53 pm

হঠাৎ জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে শিলাবৃষ্টি, পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে মাঠের পাকা ধান সময়মতো ঘরে তুলতে পারেনি কৃষক। এমন সংকটময় মুহূর্তে হঠাৎ জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে শিলাবৃষ্টি। এর প্রভাবে মাঠে থাকা পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।

সোমবার (৬ মে) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলা শহরসহ অন্যান্য উপজেলায় ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

জেলার কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখ মাসের শুরু থেকে দেশের অন্যান্য জেলার মতো শরীয়তপুরেও চলমান ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে পড়ে জেলার কৃষকরা সময় মতো পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেননি।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৫ ভাগ ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষকরা। বাকি ৫৫ ভাগের মধ্যে ২০ ভাগ ধান এখনও কাঁচা। সোমবার দুপুর থেকে ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলায়। ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি কারণে মাঠে থাকা পাকা ধান শুয়ে পড়েছে মাটিতে। এতে ধান কাটতে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টির কারণে পাকা ধান ঝড়ে পড়ে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকসহ চাষিরা।

সদর উপজেলার আটং গ্রামের ফরহাদ খান একজন ভূমিহীন চাষি। তিনি অন্যের জমিতে এ বছর ১২০ শতাংশ বোরো ধানের আবাদ করেছেন। মাত্র ২০ শতাংশ জমির ধান ঘরে তুলতে পারলেও শ্রমিক সংকটে পড়ে বাকি ধান এখনো তার মাঠে রয়ে গেছে। দুপুরে শিলাবৃষ্টি শুরু হওয়ার পর মাঠের সব ধান শুয়ে পড়েছে।

ফরহাদ খান বলেন, আমি ঋণ করে অন্যের জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। আমার সব ধান শিলাবৃষ্টি মাটিতে শুয়ে পড়েছে৷ এখন ঋণ শোধ করব কীভাবে। আর কিছুদিন পরে বৃষ্টি হলে আমার এমন ক্ষতি হতো না।

নড়িয়া উপজেলার নসাশন এলাকার কৃষক মো. নুরুল আমীন বলেন, গতকাল থেকে আকাশে মেঘ ছিল। আকাশে মেঘ আসার পরেও বজ্রপাতের আশঙ্কা মাথায় নিয়ে মাঠে ধান কেটেছি। তবুও সব ধান কাটা সম্ভব হয়নি। আমার ৯০ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

খুলনা অঞ্চল থেকে ধান কাটার কাজ করতে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে এসেছেন মিরাজ হোসেন। তিনি বলেন, গত ৪ বছর ধরে শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ধান কাটার কাজ করছি। গত বছর ১৩০ মণ ধান নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। শিলাবৃষ্টির কারণে ধান শুয়ে পড়েছে। এখন আর ধান কাটার কাজ তেমনভাবে পাওয়া যাবে না। আগের মতো ধানও পাব না।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এ বছর বোরো ধানের মৌসুমে শ্রমিক সংকট চলছে। অন্যান্য জেলার অবস্থাও একই রকম। তাপপ্রবাহ ও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেননি। অধিকাংশ মাঠে এখনও পাকা ধান রয়েছে। ঝড়সহ শিলাবৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে কৃষকরা লোকসানে পড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :